উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে পাহাড়ে পৃথক সেল গড়বে তৃণমূল

September 13, 2021 | 2 min read

রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে সেভাবে অবগত নন পাহাড়বাসী। এ জন্যই একের পর এক নির্বাচনে পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপর্যয় হয়েছে। তাই রাজ্য সরকারের পরিষেবার কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে পৃথক সেল গঠনের ভাবনা নিয়েছে পার্বত্য তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার এই পরিকল্পনার কথা জানান দলের জেলা সভানেত্রী তথা সংসদ সদস্য শান্তা ছেত্রী। তিনি মনে করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মসূচিগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দিলেই বদলে যাবে পাহাড়ের ভোটের ফল।

এক দশক আগে রাজ্যে পালাবদল হলেও দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড় নিজেদের অধীনে নিতে পারেনি তৃণমূল। প্রতিটি নির্বাচনেই এখানে তারা ব্যর্থ। এ নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের অন্দরেই নানা গুঞ্জন রয়েছে। দলের একাংশের বক্তব্য, পাহাড়ে তৃণমূলের ভিত মজবুত না হওয়ার পিছনে অনেক কারণ আছে। সেগুলির মধ্যে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক প্রকল্প সম্পর্কে পাহাড়বাসীকে অবগত করতে না পারাই অন্যতম কারণ। এবার এই ত্রুটি দূর করতে তৎপর হয়েছে পার্বত্য তৃণমূল।

দলের জেলা সভানেত্রী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত উন্নয়নমূলক কাজ করার পরও পাহাড়ের মানুষকে বোঝানো যাচ্ছে না। কারণ, পাহাড়ের মানুষের আবেগ কিছুটা আলাদা। তাই স্কুলশিক্ষক, অধ্যাপক, আইনজীবী সহ বিশিষ্টজনদের নিয়ে ‘বুদ্ধিজীবী সেল’ গঠন করা হচ্ছে। কিরণ সুব্বা নামে এক অধ্যাপককে এই সেল গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তৃণমূলের কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুপার সঙ্গে যুক্ত। এই সেলের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলবেন। সেলের সদস্যরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা ও প্রকল্প সম্পর্কে বোঝানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ লিপিবদ্ধ করবেন। এরপর সেলের পরামর্শ মতো দল পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এতে দলের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। ভোটের ফলও পাল্টে যাবে। তেমনই পাহাড়ের উন্নয়নে আরও জোয়ার আসবে।

এদিন দিল্লি থেকে শিলিগুড়িতে আসেন পার্বত্য তৃণমূলের সভানেত্রী। পাহাড়ে ওঠার আগে তিনি দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের (সমতল) চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অলোকবাবু একসময় শ্রমিক সংগঠন করতেন। সেই সুবাদে পাহাড়ের জিএনএলএফের প্রাক্তন শ্রমিক নেতা মহেন্দ্র ছেত্রীর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন তৃণমূলে শামিল হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অলোকবাবুর কাছে। এদিন পাহাড় তৃণমূলের সভানেত্রীর সঙ্গে সেই বিষয়টি নিয়ে অলোকবাবুর আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া পাহাড় ও সমতলের চা বাগান এবং সিঙ্কোনা বাগানে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধির ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে।

অলোকবাবু অবশ্য বলেন, এটা দলীয় বিষয়। এ ব্যাপারে কিছু বলব না। পার্বত্য তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী বলেন, ইতিমধ্যে বিজেপি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সহ বিভিন্ন দল থেকে অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আরও অনেকে তৃণমূলে শামিল হতে চাইছেন। তবে এই মুহূর্তে যাকে তাকে দলে নেব না। দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন, উদ্যমী ও যুবক-যুবতীদের গুরুত্ব দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, দার্জিলিং জেলার পার্বত্য অংশ এবং গোটা কালিম্পং জেলা নিয়ে পাহাড়ের রাজনীতি। বর্তমানে এখানে আঞ্চলিক দলের সংখ্যা ১৮টি। বেশ কিছু আঞ্চলিক দল কোন্দলে জেরবার। এই অবস্থায় নিজেদের সংগঠন চাঙ্গা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পার্বত্য তৃণমূল। দলের জেলা সভানেত্রী বলেন, ইতিমধ্যে কালিম্পংয়ে জেলা ও চারটি ব্লক কমিটি গঠন হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ের সর্বস্তরে কমিটি গঠনের কাজ চলছে। একইসঙ্গে দলের জেলা নেতাদের বিভিন্ন ব্লকে সংগঠন গড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#intellectuals, #tmc, #Hills

আরো দেখুন