দেশ বিভাগে ফিরে যান

মোদী জমানায় সারের দাম আকাশছোঁয়া, মাথায় হাত কৃষকদের

September 14, 2021 | 2 min read

আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৪ সালে দেশের মসনদে বসেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আচ্ছে দিন তো দূরের কথা, ধীরে ধীরে চাষিদের জন্য দুঃস্বপ্নের দিন ঘনিয়ে আসছে বলে তাঁদের অভিমত। বেড়ে চলেছে সারের দাম। সাত বছর আগের সঙ্গে এখনকার দামের ব্যবধান অনেকটাই। সারের কালোবাজারি ও একদিকে মহামারী করোনা জোড়া ফলায় বিদ্ধ শস্য ভাণ্ডার পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা। চলতি মরশুমে চাষের জন্য বস্তা পিছু সার কিনতে খরচ বেড়েছে গড়ে ৬০০-৭০০ টাকা। বিঘা পিছু চাষে প্রায় ৫০-৫৫কেজি সারের দরকার পড়ে। ফলে খরচ অনেকটাই বেড়েছে। রাজ্যের শস্য ভাণ্ডার পূর্ব বর্ধমানের চাষিরা এরজন্য মোদীর ভ্রান্ত নীতিকে দায়ী করছেন। বছর দুই আগে এক বিঘা আমন ধানের উৎপাদন খরচ ছিল পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। আজ তা বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা।

কৃষিজমিতে ফলন বৃদ্ধির জন্য রাসায়নিক সারের ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু দামবৃদ্ধির জেরে মহাসঙ্কটে পড়েছেন চাষিরা। দেড় গুণ দাম বেড়ে সারের দাম হয়েছে আকাশছোঁয়া। ইউরিয়া(নাইট্রোজেন), ডিএপি, এনপিকে ১০:২৬:২৬ ও পটাশের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এক বস্তা ইউরিয়ার দাম ছিল ২৮০-৩০০ টাকা, বর্তমান দাম দাঁড়িয়েছে ৩৬০-৪০০টাকা। কোথাও কোথাও কালোবাজারির জেরে খোলাবাজারে এই সার মিলছে না। ফলে ৪৫০ টাকা দিয়েও এক বস্তা সার কিনতে হচ্ছে চাষিদের। ডিএপির দাম ছিল এক হাজার টাকার কাছাকাছি, বর্তমান দাম দাঁড়িয়েছে ১৬০০ টাকার বেশি। কয়েক বছর আগেও পটাশের দাম ছিল বস্তা পিছু ৭০০ টাকা। এখন সেই দাম ১০৫০ টাকা। এক বস্তা এনপিকে ১০:২৬:২৬-এর দাম ছিল ১১৫০-১২৫০টাকা, বর্তমান দাম ১৪০০-১৫০০ টাকা। এর উপর প্রতি বস্তায় সরকার ভর্তুকি দেয়। তবে চাষিরা চাইছেন সারের দাম কমানো হোক। ভর্তুকির দরকার নেই।

মেমারি-২ ব্লকের ঝিকড়ে গ্রামের চাষি শেখ সুখলাল বলেন, মোদী জামানায় বস্তা পিছু সারের দাম বেড়েছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। এমন আচ্ছে দিনের কোনও দরকার ছিল না। আগে ডিএপির দাম ছিল ১০৫০ টাকা। এখন সেই দাম ১৬০০ টাকা। কোথাও কোথাও ১৭০০ টাকাও নিচ্ছে। ইউরিয়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে দ্বিগুণ দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এমনকী ৫০ কেজির বস্তা এখন ৪৫কেজি করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভর্তুকি দরকার নেই। আমাদের টাকা সরকার নিয়ে আবার আমাদের দিচ্ছে। এর কোনও মানে হয় না। এই সমস্ত প্রয়োজনীয় সারের পর্যাপ্ত জোগান নেই বাজারে। চাষিরা হাপিত্যেস করে বসে থাকে সারের আশায়। আমন চাষে দুই দফায় সার দেন চাষিরা। প্রথমে ১০ কেজি ইউরিয়া ও ২০ কেজি ডিএপি ব্যবহার করেন। কিছুদিন পর ১০ কেজি করে ডিএপি ও ইউরিয়া ছড়িয়ে দেন জমিতে। কিন্তু, মাঝে মধ্যেই সার পাওয়া যাচ্ছে না। মন্তেশ্বরের চাষি সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণের কোনও পদক্ষেপ নেই। খোলাবাজারে সারের আকাল হলেই শুরু হয়ে যায় কালোবাজারি। সারের এই দামবৃদ্ধির জেরে বাড়ছে ফসল উৎপাদনের খরচও। তাতে চাষে লাভ কমে যাচ্ছে।

জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার চাষিদের প্রতি যে অবিবেচক, তা সারের দাম বৃদ্ধিই প্রমাণ করে দিচ্ছে। সারের কালোবাজারি রুখতে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ করা দরকার। সারের দাম চাষিদের আয়ত্তের মধ্যে রাখার জন্য মোদী সরকারের ভাবা উচিত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#farmers, #Fertilizers, #Narendra Modi

আরো দেখুন