পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল শীর্ষ আদালত
পশ্চিমবঙ্গে প্যারাটিচার (Para Teacher) বা পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ করা হচ্ছে না প্রায় ১৯,০০০ পার্শ্বশিক্ষককে, এই অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার রায় এই কারণে স্থগিতও রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানিতে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচুড়ের প্রশ্ন, “এখন তো টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যোগ্য শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। তাদের হাতেই রাজ্যের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকতে দিন। কেন প্যারাটিচার বা পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের উপরে জোর দিচ্ছেন?” এর পরেই রায় স্থগিত করা হয়।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের দাবিতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া বিভিন্ন সংগঠনের তরফে এদিন জোরালো দাবি জানানো হয় দ্রুত নিয়োগের কথা বলে। পার্শ্বশিক্ষকদের প্রতিনিধি ও বর্ষীয়ান আইনজীবী মীনাক্ষী আরোরার যুক্তি ছিল, ” বছর পঞ্চাশেক আগে যখন রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি, তখন এই পার্শ্বশিক্ষকরাই গ্রামে গ্রামে গিয়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়াতেন এবং শিক্ষার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ তৈরি করতেন। পরবর্তীকালে তাঁদের কথা কেউ মনে রাখেনি। এই পরিস্থিতিতে আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।” কিন্তু তাঁর এই আর্জিতে সাড়া না-দিয়ে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে শীর্য আদালত।
পার্শ্বশিক্ষকদেরই আর এক অংশের প্রতিনিধি, আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক যুক্তি দেন, বেশ কিছুদিন আগে এই মামলায় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের তরফে যে অন্তবর্তী রায় দেওয়া হয়েছিল সেই রায়ের ওপর ভিত্তি করেই পার্শ্বশিক্ষকদের বয়সের দিকটা খতিয়ে দেখে তাদের নিয়োগে সবুজ সঙ্কেত দিক রাজ্য সরকার। কিন্তু এই যুক্তিও খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি চন্দ্রচুড়ের পাল্টা প্রশ্ন, ১৯৮০ সালে যখন পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার তাদের আইন সংশোধন করে ফেলেছে, তখন নতুন করে আবার তা পরিবর্তন করার কী প্রয়োজন! বিশেষত, যখন রাজ্যে টেট-উত্তীর্ণ যোগ্য শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে এবং এই শিক্ষকদের নিয়োগ করার কাজও চলছে জোরকদমে।