দেশ বিভাগে ফিরে যান

পেট্রল-ডিজেলে বসবে জিএসটি? সিদ্ধান্ত আজকের বৈঠকে

September 17, 2021 | 2 min read

পেট্রল ও ডিজেলকে কি জিএসটির আওতায় নিয়ে আসা হবে?  আজ, শুক্রবার লখনৌতে বসছে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক। ওষুধ হোক বা ক্ষতিপূরণ সেসের সময়সীমা বৃদ্ধি—সব এজেন্ডা ছাপিয়ে এই মুহূর্তে গোটা দেশের নজর শুধু জ্বালানি ইস্যুতে। পেট্রল ও ডিজেলকে জিএসটির আওতায় আনার ইস্যুতে আজ আলোচনার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও এই বিষয়ে সব রাজ্য মোটেও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারছে না। যে একঝাঁক রাজ্য এর বিরোধিতা করছে, তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। এ ব্যাপারে বাংলার যুক্তি পরিষ্কার, ক্ষতিপূরণ তো বটেই, জিএসটি বাবদ রাজ্যের প্রাপ্য হাতে পেতে কালঘাম ছুটে যায়। বকেয়া মেটানোয় এই গাফিলতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে অ-বিজেপি রাজ্যগুলি। কাজেই জিএসটি বাবদ প্রাপ্য অর্থ ফেরত পাওয়ার রাস্তা মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত পেট্রল-ডিজেলকে পণ্য পরিষেবা করের আওতায় আনতে রাজি নয় বাংলা। বিরোধী রাজ্য তো বটেই, বিজেপি শাসিত কর্ণাটকও রয়েছে আপত্তি জানানোর তালিকায়। 


এদিনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে হাজির থাকবেন পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অর্থসচিব মনোজ পন্থ এবং অন্য আধিকারিকরা। তাঁদের পক্ষ থেকে এই অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে জিএসটির টাকা ফেরত সংক্রান্ত সমস্যা এছাড়াও অবশ্য রাজস্ব একধাক্কায় অনেকটা কমে যাওয়ার বিষয়ও রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই জীবন-জীবিকা ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে। উপরন্তু স্বাস্থ্য, পরিষেবা এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে খরচ বেড়েছে বহুগুণ। ফলে সার্বিকভাবে এখনই জ্বালানির উপর জিএসটি চাপানোর বিরোধিতাই করবে রাজ্যগুলি। অর্থাৎ বৈঠকে এই ইস্যুতে ঝড় উঠতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।


এখানেই শেষ নয়। কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ দেখা দিতে পারে জিএসটি ক্ষতিপূরণ সেস সংক্রান্ত ইস্যুতেও। বহু রাজ্য ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির সময়সীমা আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর দাবি জানাবে। কোভিড চিকিৎসার কিছু উপকরণ ও ওষুধের উপর জিএসটি হার মকুব ও কমানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেটি প্রাথমিকভাবে ছিল তিন মাসের জন্য। পরে তা আরও একমাস, অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় ওই সিদ্ধান্ত আরও তিন মাস বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে যে কয়েকটি ওষুধের উপর জিএসটি কমানো হয়েছে, তার বাইরে আরও অন্তত সাতটি ওষুধের ক্ষেত্রে একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি উঠেছে। মোট ৩২টি পণ্য এবং ২৯টি পরিষেবায় জিএসটি হারের রদবদল নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে কিছু কিছু পণ্য ও পরিষেবার উপর জিএসটি আরোপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে অনলাইন খাবার ডেলিভারি পরিষেবার উপর ৫ শতাংশ জিএসটি চাপানোর প্রস্তাব। যেহেতু রেস্তরাঁর খাবার ঘরে বসেই বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে, তাই তার উপর পরিষেবা কর কেন চাপবে না? এই প্রশ্ন অর্থনৈতিক মহল থেকে তোলা হচ্ছে। তবে সাধারণ হোম ডেলিভারি নয়, অ্যাপ নির্ভর খাবার ডেলিভারি ব্যবস্থার উপরই জিএসটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। 


কোভিড এখনও বিদায় নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির প্রধান লক্ষ্য একটাই—রাজস্ব বৃদ্ধি। তবে তার জন্য যাতে কোনওভাবেই ভারসাম্য বিগড়ে না যায়, সেটাও ভাবনায় রয়েছে সরকারের। তাই নজরে আসছে নতুন নতুন পণ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্র। কিন্তু যে সেক্টরগুলিতে জিএসটির হার প্রথম থেকেই বেশি, সেই সেক্টরগুলিতে জিএসটির হার কমানোর দাবি তুলেছে বাণিজ্যিক মহল। একইসঙ্গে রুগ্ণ শিল্পগুলির ক্ষেত্রেও এই একই দাবি উঠছে। আজ এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও কি হতে চলেছে বৈঠকে? নজর রয়েছে তাতেও।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#petrol, #GST Council, #diesel

আরো দেখুন