রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

এই প্রথম! সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের গাইডের ভূমিকায় মহিলারা

September 19, 2021 | 2 min read

 সুন্দরবনে বাস করেও এই জঙ্গল সম্পর্কে অনেক কিছু অজানা ছিল। দু’দিনের প্রশিক্ষণে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। বলছিলেন বীথিকা রায়। এ কথায় মাথা নেড়ে সায় দিয়ে সুমনা মণ্ডল বললেন, ভয়কে জয় করে এই পেশায় এসেছি। অনেক কিছু জানব, শিখব বলে। অনেকটা পথ যেতে হবে আমাদের। সুন্দরবনের সুমনা, বীথিকা সহ আরও দু’জন মহিলা এমন কাজে যুক্ত হচ্ছেন, যা এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে গতানুগতিকতার বাইরে অভিনব বললে অত্যুক্তি হয় না। পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই প্রথমবারের জন্য সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের গাইডের ভূমিকা পালন করবেন মহিলারা।


তাঁরা হলেন, মধুমিতা মণ্ডল, সুমনা মণ্ডল, বীথিকা রায় এবং ভাস্বতী কামিলা সরকার। তাঁদের নিয়ে এখন জোর চর্চা চলছে সুন্দরবন জুড়ে। এবারই প্রথম প্রথা ভেঙে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প মহিলা গাইড নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। সেইমতো এই চারজন এগিয়ে আসেন এই কাজের জন্য। গত ১৪ এবং ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারপর থেকে জীবন যেন অনেকটাই বদলে গিয়েছে সুমনা, মধুমিতা, বীথিকা, ভাস্বতীদের। বীথিকাদেবী বলেন, ২০১০ থেকে টানা সাত বছর সুন্দরবন রক্ষা নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছি। তারপর তিন বছর বাড়িতেই বসে ছিলাম। হঠাৎ খবর পাই, ব্যাঘ্র প্রকল্পে মহিলা গাইড নেবে। সেইমতো সেখানে নাম লেখাই। দু’দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।  সদ্য স্নাতক সুমনা বলেন, অজানা ভয় এবং উদ্দীপনাকে সঙ্গী করেই এই কাজে এগিয়ে যেতে চাই। সবচেয়ে যেটা ভালো লাগছে, এখন থেকে নিজের হাতখরচ নিজেই জোগাড় করতে পারব। পাশাপাশি পরিবারের পাশেও দাঁড়াতে পারব প্রয়োজনমতো। উল্লেখ্য, এই গাইডদের দিন প্রতি (যেদিন পর্যটকদের সঙ্গে বেরতে হবে) ৬০০ টাকা করে দেওয়া হবে। ন’মাসের শিশুর মা মধুমিতা মণ্ডলও গাইড হচ্ছেন। ছোট সন্তানকে ঘরে রেখেই কাজে আসার জন্য মনস্থির করেছেন তিনি। পরিবারের আর্থিক সঙ্কট নিরসনে কাজ তো কিছু করতেই হবে। তা যদি পর্যটকদের সুন্দরবন চেনানোর কাজ হয়, তা আনন্দের সঙ্গেই করতে পারব—জানালেন মধুমিতাদেবী। বাকিরা কিছুটা ঘটনাচক্রে এই কাজে এসে পড়লেও ভাস্বতীদেবীর কাছে এই কাজে আসার কারণটা একটু আলাদা। দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের গাইড হওয়ারই স্বপ্ন দেখতেন তিনি। বনদপ্তরের উদ্যোগে সেই স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের কোলে আমার জন্ম। তাই খুব ইচ্ছে ছিল এখানকার গাইড হয়ে মানুষকে জঙ্গল চেনানোর কাজ করব। অবশেষে সেই সুযোগ এসেছে। দু’দিনের প্রশিক্ষণে অনেক কিছু উপলব্ধি হয়েছে। 


গাইডের কাজে মহিলাদের এমন সাড়া দেখে উচ্ছ্বসিত সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্তারা। আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তাঁরা আশাবাদী। গাইডদের সুবিধার্থে যে পুস্তিকা দেওয়া হয়, তা এবার বাংলাতে অনুবাদ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#sundarban, #female guide, #sundarban tiger project

আরো দেখুন