আচমকা পরিদর্শনের সুফল, লাগামহীন বাসভাড়া বৃদ্ধিতে রাশ
পুজোর মুখে বেসরকারি বাস-মিনিবাসে ইচ্ছামতো বর্ধিত ভাড়া নেওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমেছে। চলতি মাসের গোড়া থেকে মোটর ভেহিক্যাল ইনসপেক্টর (এমভিআই) বা পরিদর্শকদের রাস্তায় নামার সুফল পাচ্ছেন রাজ্যবাসী। পরিবহণ দপ্তর সূত্রের খবর, বেসরকারি রুটের বাসগুলি যাত্রীদের থেকে লাগামছাড়া ভাড়া দাবি করছিল। যার জেরে প্রায়ই কন্ডাক্টরের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা লেগেই থাকত। এ নিয়ে পরিবহণ দপ্তরে একাধিক অভিযোগপত্রও জমা পড়েছিল। তার ভিত্তিতেই পরিদর্শকদের রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। চলতি মাস থেকেই এমভিআইরা আচমকা বাসে উঠে ‘সাইপ্রাইজ ভিজিট’ শুরু করেন। পরিবহণ দপ্তরের এই পরিদর্শকরা সাদা পোশাকে যাত্রী সেজে একাধিক ক্ষেত্রে টিকিট কেটে অনিয়ম হাতেনাতে ধরেন। তাঁরা যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে বিশদে আলোচনাও করেন। যাত্রীদের দাবি, পরিবহণ দপ্তরের এই পরিদর্শকদের এই হানা দেওয়ার ঘটনায় ভাড়ায় অনেকটাই লাগাম পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় এক কর্তা বলেন, গত সাতদিনে বর্ধিত ভাড়া সংক্রান্ত অভিযোগের বহর অনেকাংশে কমেছে। এমভিআইদের এই পরিদর্শনের পর এনফোর্সমেন্ট রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। যেসব রুটের বাসের বিরুদ্ধে ভাড়া সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট বাস মালিকদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বাস মালিকরা জানেন না, কর্মীরা এভাবে ইচ্ছামতো টিকিট কাটছেন। তারপরই বাস মালিক এবং সংগঠনগুলির তরফে পরিবহণ কর্মীদের ডেকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে। তারপর থেকেই বেসরকারি বাস-মিনিবাসে বর্ধিত ভাড়া সংক্রান্ত এই অভিযোগ কমতে শুরু করেছে। সূত্রের দাবি, বর্তমানে পেট্রপণ্যের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে যাত্রীরা সচেতন। ফলে আট টাকা ভাড়া দশ টাকা দিতে অধিকাংশ যাত্রী কার্পণ্য করছেন না। অর্থাৎ খুশি মনেই অনুদান হিসেবে এক টাকা কিংবা দু’টাকা বেশি দিচ্ছেন তাঁরা।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ, ১৪ টাকার ভাড়া বহু রুটে ২৫ টাকা কিংবা ৩০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল। যা এক কথায় বেআইনি বলে সরাসরি মনে করছেন খোদ বেসরকারি বাস মালিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার ভাড়া বৃদ্ধি করবে না বলে কার্যত প্রতিজ্ঞা করেছে। স্বভাবতই করোনা আবহে যাত্রীদের থেকে অনুদান হিসেবে এক কিংবা দু’টাকা বেশি না নিয়ে বাস রাস্তায় নামানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। পুজোর মুখে যাত্রী সংখ্যা ফের কিছুটা বাড়তে থাকায় কাঙ্ক্ষিত না হলেও খরচ তোলার মতো আয় হচ্ছে। পরিবহণ কর্তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার চায় সুষ্ঠুভাবে রাস্তায় বাস-মিনিবাস চলুক। পাশাপাশি পরিবহণ ক্ষেত্র ও যাত্রী সাধারণের মধ্যে সমন্বয় রেখে গোটা ব্যবস্থা পরিচালিত হোক।