আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

তালিবানি ফতোয়ায় বন্ধ মেয়েদের পড়াশোনা, প্রতিবাদে স্কুল বয়কটের সিদ্ধান্ত ছাত্রদের

September 20, 2021 | 2 min read

তালিবান আছে তালিবানেই! কাবুল দখলের পর একের পর এক পদক্ষেপ অন্তত সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। বিশেষ করে মহিলাদের উপর বিধি নিষেধের নিরিখে। অফিস থেকে পড়াশোনা—সবেতেই নানা ফতোয়া। হিজাব, বোরখা, পর্দা—বিধিনিষেধের বহরে জর্জরিত আফগান মহিলাদের জীবন। শুক্রবার দেশে ছেলেদের পড়াশোনার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল। কিন্তু মেয়েদের ভবিষ্যৎ এখনও প্রশ্নের মুখে। তাঁদের স্কুল কবে খুলবে, নেই কোনও নিশ্চয়তা। এবার বঞ্চিত মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়ে স্কুল না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল এক দল ছাত্র। তাঁদের দাবি, মেয়েরা সমাজের অর্ধেক। অথচ তাঁরা পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বহু পড়ুয়া। দ্বাদশ শ্রেণির ১৮ বছরের তরুণ রোহুল্লা। তালিবানের কঠোরতা মেনে নিতে পারেননি তরুণ। তিনিও স্কুল না যাওয়াদের দলে। তাঁর কথায়, ‘সমাজের অর্ধেক গঠন করেন মহিলারা। যতক্ষণ না মেয়েদের স্কুল খুলছে, আমিও স্কুলে যাব না।’ যদিও বেশ কিছু ছাত্র শনিবার থেকে স্কুলে ফিরেছে। শুক্রবার তালিবান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছেলেদের সেকেন্ডারি স্কুল খোলার নির্দেশ দেন। সেখানে বলা হয়, ‘সমস্ত পুরুষ শিক্ষক ও পড়ুয়ারা স্কুলে যোগ দিন।’ মেয়েদের শিক্ষা প্রসঙ্গে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ শনিবার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মেয়েদের সেকেন্ডারি স্কুল খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে মেয়েদের সেকেন্ডারি স্কুল কবে খুলবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি। এর আগে তালিবান জানিয়েছিল, উচ্চশিক্ষায় কোনওভাবেই ছেলে-মেয়েদের এক সঙ্গে ক্লাস করতে দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে ক্লাস রুমে পর্দা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের আলাদা করে বসার ব্যবস্থা করা হতে পারে।

কাবুলের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকের প্রস্তাব—ছেলে ও মেয়দের আলাদা আলাদা সময়ে ক্লাস করার ব্যবস্থা হতে পারে। ছেলেদের ক্লাস নেবেন পুরুষ শিক্ষকরা। মেয়েদের ক্লাস নেবেন শিক্ষিকারা। তবে সবই রয়েছে আলোচনার স্তরে। ওই স্কুলের অধ্যক্ষ মহম্মদ রেজা মহিলাদের স্কুল দ্রুত খোলার পক্ষেই সওয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষিত পুরুষরা পরিবারকে প্রভাবিত করে। কিন্তু নারী শিক্ষা সমাজকে প্রভাবিত করে। কীভাবে মেয়েরা তাঁদের পড়াশোনা শেষ করবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।’ এদিকে আফগানিস্তানে মহিলা শিক্ষা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। দ্রুত উঁচু ক্লাসের মেয়েদের স্বাভাবিক স্কুল শুরু করার দাবি জানিয়েছে তারা। এরইমধ্যে শনিবার প্রাথমিক স্কুলে ফিরতে দেখা গিয়েছে আফগান শিশুকন্যাদের। তবে বড়দের স্কুলে ফেরা বিশ বাঁও জলে! ১৫ আগস্ট তালিবান কাবুল দখলের পর থেকেই সেখানকার বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ রয়েছে। তালিবান শিক্ষানীতি নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে। যদিও তালিবান বারবার দাবি করেছে, ২০ বছর আগের অবস্থানে ফিরে যেতে চায় না তাঁরা। নিজেদের উদার মুখ তুলে ধরতে শুরু থেকেই চেষ্টা চালাচ্ছে তালিবান। তবে সবটাই এখনও ধোঁয়াশা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Taliban, #Education

আরো দেখুন