বঙ্গ রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে বাণপ্রস্থে দিলীপ? জাতীয় সহ সভাপতি নিয়োগে জল্পনা
মেয়াদ ফুরানোর আগেই সরিয়ে দেওয়া হলো দিলীপ ঘোষকে। ডাকাবুকো দিলীপ ঘোষের জায়গায় রাজ্য সভাপতির পদে এলেন অনেকটাই শান্ত আরএসএস ঘনিষ্ঠ নেতা সুকান্ত মজুমদার (Dilip Ghosh replaced by Sukanta Majumder)। বিকল্প হিসেবে সুকান্তর নাম দিলীপ ঘোষ নিজেই দিল্লি গিয়ে দিয়ে এসেছিলেন। ফলে প্রশ্নটা তাঁর অভিষেক নিয়ে নয়, বরং প্রশ্ন উঠছে মেয়াদের আগে দিলীপ ঘোষের অপসারণ (Dilip Ghosh replaced by Sukanta Majumder) নিয়ে। জল্পনা চলছে, দিলীপ ঘোষের নতুন দায়িত্ব নিয়েও।
কিন্তু যে দিলীপ ঘোষ প্রায় শূন্য থেকে বিজেপি দলটাকে বাংলায় গড়লেন তাঁকেই কেন দায়িত্ব থেকে সরানো হবে? এ কি ভোট বিপর্যয়ের মাশুল?রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, দিলীপ ঘোষকে ভোটে ব্যবহার করতে চেয়েছিল বিজেপি। অন্য দিকে দিলীপ ঘোষ মুখে যতই বলুন আরও কয়েক মাস মেয়াদ রয়েছে, দল যে প্রস্তুতি নিচ্ছে রদবদলের তা তিনি জানতেন। দলের একাংশের ক্ষোভও ছিল দিলীপ শিবিরের উপর।
নতুন ভূমিকা নিয়ে অবশ্য দিলীপ ঘোষ কোনও উষ্মা প্রকাশ করছেন না। বরং বারবার বলছেন, দল যে দায়িত্ব দেবে তা-ই পালন করবেন তিনি। তবে জাতীয় স্তরের নেতৃত্বদানে দিলীপ ঘোষ কতটা আগ্রহী তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্নের অবকাশ থাকছে। দিল্লিতে আদৌ জাঁকিয়ে বসতে চান দিলীপ ঘোষ? ঘনিষ্ঠ মহলে তিনিই তো বারবার বলেন যে, দিল্লি গেলেই চলে যান বাঙালি পাড়ায়। চালিয়ে নেওয়ার মতো হিন্দি বলেন দিলীপ ঘোষ ঠিকই কিন্তু তার রাজনৈতিক বিস্তার তো বাঙালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
ফলে কথায় কথায় এই প্রশ্নটাও আসে দিলীপ ঘোষ কি দল ছাড়তে পারেন? দিলীপ ঘোষকে যাঁরা কাছ থেকে দেখেছেন তাঁরা বলেন পদ দিলীপ ঘোষের কাছে খুব বড় বিষয় নয়। তিনি যে আদর্শে বিশ্বাস করেন সেই আদর্শ অটল থাকবেন এ কথায় শিলমোহর দেবে তাঁর ভক্তরাই। মুকুল রায় ছিলেন তৃণমূল থেকে আসা বিজেপি নেতা, দিলীপ ঘোষের পরিস্থিতি তেমনটা নয়। বরং নতুন করে কোনও কাজ না পেলে তাঁর জন্য পথখোলা থাকছে আরএসএস-এর, এখনই অন্য দলের যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কিন্তু একথাও ঠিক রাজ্য সভাপতি পদে আসীন হওয়ার পর দিলীপ ঘোষের একটি নিজস্বলাইফ স্টাইল তৈরি হয়েছিল। রাজ্যে তাঁর যে বিপুল জনপ্রিয়তা তাকে বলিউড- টলিউড ভাষায় বলা হয় ফ্যানবেস। এখন দিলীপ ঘোষ যে দায়িত্ব পালন করবেন তাতে সেই ফ্যানবেস ধরে রাখা হয়তো সম্ভব নয়।
এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কি দিলীপ ঘোষ মানিয়ে নিতে পারবেন? তাঁর জন্য অবশ্য সংঘের পথ সদাই খোলা। রাতারাতি গেরুয়া শিবিরের একটি পদক্ষেপ এমন অজুত প্রশ্নের জন্ম দিয়ে গেল।