জোর করে বিয়েতে শীর্ষে যোগী রাজ্য! এনসিআরবি রিপোর্টে মুখ পুড়ল বিজেপির
অভিজ্ঞ মানুষজন বলে, বাস্তবের ঘনঘটা রুদ্ধশ্বাস সিনেমাকেও হার মানাতে পারে। উত্তরপ্রদেশ-বিহার সহ গো-বলয়ের বিভিন্ন রাজ্যের অপরাধ-রাজনীতি-সমাজ নিয়ে প্রকাশ ঝা’র ‘অপহরণ’, ‘গঙ্গাজল’, ‘সত্যাগ্রহ’ সহ একের পর এক সিনেমা দেখে নানাসময় চমকে উঠেছে দেশের চলচ্চিত্রমোদীরা। ঘটনার বাস্তব রূপায়ণ দেখে শিউরে উঠেছেন অনেকে। এ যেন ভারতের মধ্যে আর এক খণ্ড ভারত! অনেকে আবার বলেছেন, ধুস, এইসব সিনেমাতেই হয়! রং চড়ানো ব্যাপারস্যাপার। দেশে অপরাধের বাৎসরিক পরিসংখ্যান এনসিআরবি রিপোর্ট কিন্তু বুঝিয়ে দিল, ফাইভ জি’র যুগেও গো বলয়ের বাস্তবতা সিনেমাকেও হার মানাতে পারে যেকোনও সময়।
রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, মাত্র একবছরের মধ্যে দেশে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে মেয়েদের বিয়েতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটেছে ২৪ হাজার ২৭৫টি। আর তার শিকার হয়েছেন ২৪ হাজার ৬২১ জন তরুণী। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শুধু খুন-ধর্ষণই নয়, এক্ষেত্রেও দেশে শীর্ষস্থানে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ। ২০২০ সালের সদ্য প্রকাশিত এনসিআরবি রিপোর্ট বলছে, সে বছর তরুণীদের অপহরণ করে বিয়েতে বাধ্য করার যত ঘটনা ঘটেছে, তার তিনভাগের একভাগই ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। এভাবে বিজেপির আরও এক ‘সুশাসন’-এর নমুনা ফাঁস করেছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকারি এই রিপোর্টই।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬ নং ধারা অনুযায়ী, সে-বছর শুধু উত্তরপ্রদেশেই ৭৭০৯টি অপহরণ করে বিয়েতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী হতে হয়েছে ৭৮৩০ জন তরুণীকে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি ও সহযোগী দল জেডিইউ শাসিত বিহার। ২০২০ সালে সেখানে ৫৩০৮টি অপহরণ করে বিয়েতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটেছে। শিকার হয়েছেন ৫৩৭৮ জন তরুণী। তৃতীয় স্থানেও রয়েছে আরও এক বিজেপিশাসিত রাজ্য অসম। সেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ২৯২৯টি। ভুগেছেন ২৯৮৪ জন তরুণী। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানেও রয়েছে গো-বলয়ের আরও দুই রাজ্য। পঞ্জাব (১২০০টি ঘটনা) ও রাজস্থান (১১৪৭টি ঘটনা)। মধ্যপ্রদেশ (১০২৫টি ঘটনা) এবং হরিয়ানা (৯৫৫টি ঘটনা) রয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্থানে। অপহরণ করে খুনের ঘটনার বিচারে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ নম্বর ধারা প্রযোজ্য হয়। সেই অপরাধের সংখ্যার বিচারেও সারা দেশে শীর্ষস্থানে সেই উত্তরপ্রদেশ। ২০২০ সালে সেখানে এমন ঘটনা ঘটেছে ২৬৫টি। শিকারের সংখ্যা ২৬৯।