দিলীপের পর এবার কৈলাস-শিবপ্রকাশদেরও ছাঁটবে বিজেপি?
বাংলার গত বিধানসভা ভোটের ভুল আর লোকসভায় নয়। আগে দলের বুথ শক্তিশালী করুন। বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির ঘাড়ে প্রাথমিকভাবে বুথস্তরের সংগঠন মজবুত করার ভারই দিতে চাইছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একইসঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে সবাইকে নিয়ে চলার নির্দেশিকাই দেওয়া হচ্ছে বঙ্গ বিজেপিকে। দলের কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় দলের সম্পূর্ণ নতুন টিমকে ময়দানে নামাতে চাইছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডারা। এবং সেই হিসেবেই বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেননদের বাংলার দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রে।
সোমবার রাতেই দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে দলের পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। দিলীপবাবুকে কেন্দ্রীয়স্তরের দায়িত্ব দিয়ে বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করেছেন জে পি নাড্ডা। এবং তারপরেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে বাংলায় দলের কর্মপদ্ধতি প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে ফেলেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় সহনেতা অমিত মালব্য বলেন, ‘একেবারে বুথস্তর থেকে দলীয় সংগঠনকে মজবুত করার কাজই করবেন নতুন সভাপতি।’
উল্লেখ্য, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় গিয়ে বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতারা বারবার দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে ২০০টিরও বেশি আসনে জয়লাভ করে দল ক্ষমতায় আসবে। ২০০টি আসন অনেক দূর, বাংলায় গেরুয়া শিবির তিন অঙ্কেই পৌঁছতে পারেনি। সেভাবে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে দলের অন্দরে বিশ্লেষণ না হলেও প্রাথমিকভাবে মেনে নেওয়া হয়েছিল যে, বুথস্তরের সংগঠন শক্তিশালী না হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে সঙ্গত করেছে অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দল। দলের রাজ্য সভাপতি পরিবর্তনের পর অমিত মালব্য বলেছেন, ‘আমরা প্রত্যেককে সঙ্গে নিয়েই চলব। দলের নতুন সভাপতি সংগঠন মজবুত করবেন সকলের সমর্থন নিয়েই।’
অর্থাৎ, ইঙ্গিত স্পষ্ট। দলে মতবিরোধ বরদাস্ত করা হবে না। বুথস্তরের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চাওয়ার অর্থ কি আপনার সভাপতিত্বে তা মজবুত হয়নি? কলকাতা থেকে ফোনে বিজেপির সদ্য নিযুক্ত অন্যতম কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সব বুথে কমিটি গড়া যায়নি, এটা ঠিক।
তবে আগে ২০ শতাংশ বুথে কমিটি ছিল না। আমরা ৮০ শতাংশ বুথে কমিটি গড়েছি। তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় প্রায় ২০ শতাংশ বুথে কমিটি গড়া যায়নি। কলকাতা এবং তার সংলগ্ন জেলাতেও
দলের সংগঠন ততটা শক্তিশালী নয়। এখন সেই লক্ষ্যেই কাজ হবে।’ জানা যাচ্ছে, চলতি সপ্তাহের শেষে দিল্লিতে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে পারেন বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি।