ফোনে আড়ি পাতা মামলায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের
অবশেষে ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডে কেন্দ্রীয় স্তরে শুরু হচ্ছে তদন্ত। পেগাসাস (Pegasus) কেলেঙ্কারিতে তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে অন্য একটি মামলার শুনানি চলাকালীন একথা জানিয়েছেন খোদ প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা।
বিচারপতি রামানা জানিয়েছেন, পেগাসাস মামলায় সুপ্রিম কোর্ট একটি সর্বোচ্চ স্তরের তদন্ত কমিটি গঠন করবে। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, “এই সপ্তাহের আগেই আমরা এ বিষয়ে রায় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যাঁদের নিয়ে কমিটি গঠন করার কথা আমরা ভেবেছিলাম, তাঁদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তদন্ত কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সেকারণেই নির্দেশ দিতে এত দেরি।” অর্থাৎ, প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে স্পষ্ট বিতর্কিত এই ইস্যুটি নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় স্তরে তদন্ত হবে। সেকারণে কমিটি গঠন করছে খোদ সুপ্রিম কোর্ট। আগামী সপ্তাহে এই মামলার রায়ে সেটাই ঘোষণা করা হবে। যদিও, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াতেও ধাক্কা খেতে হয়েছে শীর্ষ আদালতকে। কারণ, কমিটির সম্ভাব্য সদস্যরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এই তদন্তে অংশগ্রহণ করতে চাননি।
পেগাসাস কেলেঙ্কারিতে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে যে মামলা রুজু হয়েছে তার প্রথম শুনানি ছিল ১৭ আগস্ট। ওইদিন সরকারি আইনজীবী তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতকে জানান, ”আমাদের আদালতের কাছে গোপন করার কিছুই নেই। আদালত যে কমিটি গঠন করবে সেখানে সবকিছু পেশ করতে রাজি আমরা।” কিন্তু কেন্দ্র নিজে থেকে কোনও কমিটি গঠনে রাজি হয়নি। তাই শীর্ষ আদালতই উদ্যোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিল।
প্রসঙ্গত, দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিশিষ্টদের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে তদন্তের আবেদন জানিয়েছিল এডিটর্স গিল্ড (Editors Guild)। এ ছাড়াও পেগাসাস ইস্যুতে তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আরও বেশ কয়েকটি পিটিশন দাখিল হয়েছিল। সব মিলিয়ে ১২টি পিটিশন জমা পড়েছে। সংসদের বাদল অধিবেশন জুড়ে পেগাসাস বিতর্ক ছিল শিরোনামের শীর্ষে। বিরোধী নেতাদের দেখা গিয়েছে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে। তাই বহুবারই অধিবেশন মুলতুবি করতে হয়েছে স্পিকার কিংবা চেয়ারম্যানকে। এমনকী, নির্দিষ্ট সময়ের কয়েকদিন আগেই শেষ করে দেওয়া হয়েছিল অধিবেশন। বিরোধীদের দাবি ছিল, ফোনে আড়িপাতা কাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তে বিরোধীরা নিজেদেরই জয় দেখছেন।