পুজোয় উত্তরবঙ্গ ভ্রমণের চাহিদা তুঙ্গে, ৮০% বুকিং সরকারি লজে
করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে পুজোর ভ্রমণে দল বেঁধে পর্যটকরা উত্তরবঙ্গে আসার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গলে পর্যটন দপ্তরের অতিথি নিবাসগুলির বুকিংয়ের ছবি থেকে এমনই ইঙ্গিত পাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পর্যটন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর সময় মূলত ডুয়ার্স ও পাহাড়ে পর্যটন দপ্তরের অতিথি নিবাসগুলির প্রায় ৮০ শতাংশ বুকড হয়ে গিয়েছে। দপ্তরের অফিসারদের আশা, পুজোর আগে তা হাউসফুল হয়ে যাবে।
করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে এবার পুজোর পর্যটনে উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গল গমগম করবে। এই আশায় বুক বাঁধছে উত্তরের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পর্যটকরা সরকারি, বেসরকারি অতিথি নিবাস বুকিং করছেন। শিলিগুড়িতে পর্যটন দপ্তরের এক অফিসার বলেন, করোনা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করায় উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গলে ঘুরতে আসার ব্যাপারে পর্যটকদের মধ্যে উৎসাহ বাড়তে শুরু করে। করোনা সংক্রমণ এখন অনেকই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তাই আমরা লক্ষ্য করছি, সরকারি অতিথি নিবাসগুলির অধিকাংশ রুম বুকিং হয়ে গিয়েছে। পুজোর সময় অতিথি নিবাসগুলি পর্যটকে গমগম করবে। জলদাপাড়া ও দার্জিলিংয়ে আসার ব্যাপারেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের বেশি উৎসাহ রয়েছে। আশা করছি, পুজোর আগেই সব অতিথি নিবাস বুকড হয়ে যাবে।
মালদহ থেকে পাহাড় সহ আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত পর্যটন দপ্তরের মোট ১৬টি অতিথি নিবাস রয়েছে। এরমধ্যে জলপাইগুড়ি জেলায় রয়েছে সর্বাধিক ছ’টি। এছাড়া আলিপুরদুয়ারে একটি, দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে দু’টি করে অতিথি নিবাস রয়েছে। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও সরকারি অতিথি নিবাস আছে। তবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় পর্যটন দপ্তরের কোনও অতিথি নিবাস নেই বলে জানিয়েছেন ওই অফিসার। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর পর্যটন ব্যবসা নতুন করে সঙ্কটে পড়েছিল। তাতে এবারও পুজোর মরশুমে পর্যটন ব্যবসা কঠিন সঙ্কটের মুখে পড়ার আশঙ্কায় ছিলেন উত্তরের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে কোভিড-১৯ সংক্রমণের আতঙ্কের মাঝেও পুজোর ভ্রমণের জন্য ট্রেনের টিকিট রিজার্ভেশন শুরু হতেই তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। পুজোর সময় ট্রেনের টিকিটের এই চাহিদা দেখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বুঝে গিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যটকের ঢল নামবে পুজোর ভ্রমণে। ট্রেন ও বিমানের টিকিট কেটে রেখে পর্যটকরা অপেক্ষায় থেকেছেন পুজোর সময় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বা করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ কীভাবে আছড়ে পড়ে তা দেখার জন্য। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে পুজোর ভ্রমণের ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিবেশ নেই বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গলে ঘুরতে আসার জন্য অতিথি নিবাস, হোটেল, রিসর্ট বুকিংয়ের চিত্র এ ব্যাপারে সকলকে আশাবাদী করে তুলেছে। সরকারি অতিথি নিবাসের পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রগুলির কাছে বেসরকারি হোটেল, লজেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে সবটাই নির্ভর করছে পুজোর ভ্রমণের সময় শেষ পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ নতুন করে কোনও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে কি না,তার উপর। স্বাস্থ্যদপ্তর এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। পুজোর পর্যটন মরশুমে পর্যটকরা ঘুরতে এলে তাঁরা যাতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলেন, সেই ব্যাপারে তারা স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী, হোটেল ব্যবসায়ী, রিসর্ট মালিকদের মধ্যে সচেতনতা প্রচার শুরু করেছেন। এছাড়া পর্যটকদের জন্য সরকারি যে বিধিনিষেধ থাকবে তা মেনে চলার ব্যাপারেও স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষকে সজাগ করা হচ্ছে।