ডেঙ্গু রোধ করতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করবে পুরসভা
ডেঙ্গু নিয়ে আরও সতর্ক হল কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য প্রশাসন। তড়িঘড়ি বৈঠক করতে পুরসভায় ছুটে এলেন স্বাস্থ্যভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। বুধবার ডেঙ্গুতে বেহালার এক যুবকের মৃত্যুর খবর মিলছে। তাঁর বাড়ি বেহালাতে হলেও দীর্ঘদিন তিনি যাবৎ তিনি বরানগরে মামাবাড়িতে থাকতেন। সেখানেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হন বলে অনুমান কলকাতা পুরসভার। পাশাপাশি পুরসভার দাবি, শহরের ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ কম। অন্যদিকে, ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও তা উদ্বেগজনক হয়নি। নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। সেইসব জায়গায় স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠিয়ে নিয়মিত সার্ভে করার পাশাপাশি ফুটপাতে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদেরও রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করছে পুরসভা।
ডেঙ্গুতে বেহালার জেমস লং সরণির বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সি যুবক অভিরূপ সাহার মৃত্যুতে এদিন শোক প্রকাশ করেন পুর স্বাস্থ্যবিভাগের কর্তা অতীন ঘোষ। তবে, তাঁর দাবি, মৃত ওই যুবক কলকাতার বাসিন্দা হলেও বেশিরভাগ সময় বরানগরে থাকতেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার আগেই প্রায় ১৫ দিন তিনি মামা বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকেই ডেঙ্গুর ভাইরাস তাঁর শরীরে ঢুকে থাকতে পারে। কলকাতায় আনার পর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর পরিবারের লোকেরা ভর্তি করতে যান। কিন্তু সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক চিকিৎসক ছেলেটির শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক নয় বলেই জানান। ভর্তি নেওয়া হয়নি। পরে ফের ছেলেটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং তিনি মারা যান।পাশাপাশি পুরসভার দাবি, শহরে গত কয়েক বছরের তুলনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রায় ৭০ শতাংশ কম। বিশেষ করে সংযুক্ত এবং পূর্ব কলকাতা অর্থাৎ পুরসভার ১০, ১১, ১২, ১৪, ১৬ নম্বর বরোয় যেখানে প্রতিবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হয় সেখানে অনেকটাই কম কেস মিলেছে বলে দাবি করেন অতীনবাবু। তাঁর কথায়, এখন প্রতিদিন ৭ নম্বর বরোয় কমবেশি ১০ জন এবং বাকি বরোগুলিতে দু-একজন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন। মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে পুরসভা রাতের অভিযান এবং বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। পুরসভার তথ্য বলছে, ম্যালেরিয়া কিছুটা হলেও বেড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় চার হাজার। ম্যালেরিয়া রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশ ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বরো এলাকার বাসিন্দা। অতীনবাবু বলেন, চিরকালই ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি এখানে উদ্বেগজনক। কারণ অনেক বাজার এবং কলকারখানা রয়েছে এই এলাকায়। তাই বহু পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তাঘাটে রাতে ঘুমোন। মশা একজনকে কামড়ে অপরকে খুব সহজে কামড়াতে পারে। তাই, আমরা রাতে অভিযান করছি। তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করছি। এতদিন যেসব স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার বিষয়ে সমীক্ষা করেছেন, ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গুর সমীক্ষার কাজেও নামানো হচ্ছে তাঁদের।