ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে ফিরতে চলছে স্মার্ট কার্ড, সিদ্ধান্ত পরিবহন দপ্তরের
প্রায় দেড় বছর পর পরিবহণ ক্ষেত্রে ফের ফিরতে চলেছে স্মার্ট কার্ড। আগামী দিনে রাজ্যের যাবতীয় গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের নথি আগের মতো স্মার্ট কার্ডেই থাকবে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে গাড়ি এবং চালকের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এই দুই সরকারি নথির ক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ড পাওয়া যাচ্ছিল না। এই মুহূর্তে কলকাতা ও জেলাস্তরে আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তর থেকে এই দুই নথি প্রিন্ট করে কাগজের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট আবেদনকারীকে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এই কাগজ ছিঁড়ে যাওয়ার সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিস এই কাগজের নথিকে বৈধতা দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে রাস্তায় অহেতুক হেনস্তার শিকার হতে চলেছে গাড়ির মালিক ও চালকদের, যা নিয়ে ক্রমেই অসন্তোষ বাড়তে থাকায় ফের স্মার্ট কার্ড ফিরতে চলেছে। সম্প্রতি পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ সিনহা পুনরায় রাজ্যের সর্বত্র এই স্মার্ট কার্ড চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক ২০১৯ সালের মার্চ মাসে দেশজুড়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করার নির্দেশ জারি করে। কিন্তু অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই আদেশনামা কার্যকর করতে ঢিলেমি করে। পরিবহণ দপ্তর সূত্রের খবর, এই স্মার্ট কার্ড তৈরির জন্য ওয়েবেল মনোনীত একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করলেই ২০০ টাকা স্মার্ট কার্ড বাবাদ অগ্রিম মিটিয়ে দিতে হতো আবেদনকারীকে। স্মার্ট কার্ড বাবদ এই টাকা নিয়ে জেলায় জেলায় নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী, নতুন করে এই কার্ড তৈরির জন্য বেসরকারি সংস্থা বাছাই করার প্রক্রিয়া আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়ে। শেষমেশ স্মার্ট কার্ডের বদলে আগের পুরনো কাগজের নথিতেই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবহণ দপ্তর। কলকাতাসহ কয়েকটি জোন এই নির্দেশ মেনে কাগজের লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট ইস্যু করলেও কয়েকটি জেলা স্মার্ট কার্ড চালু রেখেছিল। পরিবহণ দপ্তরের অভ্যন্তরীণ এই সমন্বয়ের অভাব ক্রমেই প্রকট হয়ে পড়েছিল। পরিবহণ দপ্তর সূত্রের দাবি, বিভাগীয় স্তরে সমন্বয় আনতে এবং প্রবল জনমতের চাপে কার্যত স্মার্ট কার্ড ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার। এ প্রসঙ্গে নবান্নের এক কর্তা বলেন, কাগজের এই নথি নিয়ে পুলিসি হেনস্তার একাধিক অভিযোগ প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে জমা পড়েছিল। কলকাতা পুলিসের বিরুদ্ধে এক পদস্থ কর্তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালককে রাস্তায় ধরে দীর্ঘসময় আটকে রাখার অভিযোগও উঠেছিল। এরপরই নতুন করে স্মার্ট কার্ড চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চিপ বেসড ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং কিউআর কোড বিশিষ্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট সমৃদ্ধ স্মার্ট কার্ড তৈরির জন্য নির্দিষ্ট বেসরকারি সংস্থা বাছতে শীঘ্রই টেন্ডার ডাকা হবে। যদিও কবে থেকে স্মার্ট কার্ড ইস্যু হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি পরিবহণ কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, এখন থেকে যাঁরা এই দুটি নথির জন্য আবেদন করবেন তাঁদের থেকে স্মার্ট কার্ড বাবদ টাকা আগ্রিম কেটে নেওয়া হবে। কার্ড তৈরি হয়ে গেলে আবেদনকারীর হাতে তা তুলে দেওয়া হবে।