মৃতপ্রায় যাত্রা শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে ১০ বছরে বেড়েছে সরকারি অনুদান
একটা সময় ধুঁকছিল রাজ্যের যাত্রা শিল্প। নতুন সরকার আসার পর সেই খরা কাটিয়ে একটু একটু করে ঝিমিয়ে পড়া সেই লোকশিল্পে একটা গতি আসে। রাজ্যের যাত্রা উন্নয়নের পাশাপাশি এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রবীণ ও দুঃস্থ শিল্পী, কলাকুশলীদের বার্ষিক এককালীন অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। রাজ্য যাত্রা আকাদেমি সূত্রের খবর, ২০১২‑১৩ অর্থবর্ষে মোট ৮৯ জন প্রবীণ যাত্রাশিল্পীকে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা হারে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯‑২০ সালে সেই প্রাপকের সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৮৪৮। দেওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান। আকাদেমির এক কর্তা বলেন, যেসব শিল্পী-কলাকুশীল জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। এই আর্থিক অনুদান তাঁদের কিছুটা দিশা দেখাবে। তাই সরকারি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই।
চিৎপুর যাত্রাপাড়ার অপেরা কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, বাম আমলে এই শিল্প অনেকাংশে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। নানাবিধ করের জাঁতাকলে পড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেই সমস্ত করের অনেকটাই মকুব করেছে। সরলীকরণ করা হয়েছে নানা নিয়ম‑কানুন। ফলে যাত্রাশিল্পে একটা জোয়ার এসেছে। শিল্পীদের একাংশের বক্তব্য, যাত্রাশিল্পীদের মধ্যে অনেকেই জীবনেরর শেষপ্রান্তে পৌঁছেও সরকারি সম্মান ও অর্থ পাননি। ফলে লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকেই তাঁরা নীরবে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। প্রবীণ যাত্রাশিল্পী রুমা দাশগুপ্ত বলেন, প্রবীণ ও দুঃস্থ যাত্রাশিল্পীদের জন্য রাজ্য সরকার বছরে যে অনুদান দিচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এমনকী, এই সরকার বহু প্রবীণ‑নবীন শিল্পী, পালাকার, নির্দেশক, প্রযোজক, গবেষককেও ইতিমধ্যে নানা সম্মানে ভূষিত করেছে। যা পূর্বতন সরকারের সমস্ত নজিরকে ছাপিয়ে গিয়েছে। রাজ্য যাত্রা সম্মেলনের দুই কর্তা সমীর সেন ও রূপকুমার ঘোষ বলেন, নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে রাজ্য যাত্রা আকাদেমির সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস যেভাবে এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে আমরা খুশি। চাই এই শিল্পের আরও শ্রীবৃদ্ধি।