ডিজাইনের আধুনিকতায় ভারত-সেরা বাংলার ‘তন্তুজ’
ডিজাইনে আধুনিকতার ছোঁয়া নিয়ে আসার জন্য ২০১৮ সালে দেশের মধ্যে সেরা হল ‘তন্তুজ’। কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রক থেকে এই পুরস্কার পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে তন্তুজ এবং নবান্নকে। বস্ত্রমন্ত্রকের পাঠানো রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট অব হ্যান্ডলুম প্রোডাক্টে’ ২০১৮ সালে সংস্থাগতভাবে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেল তন্তুজ। আর ব্যক্তিগতভাবে পুরস্কৃত হলেন নদীয়ার শিল্পী বীরেন বসাক। এই পুরস্কার পেয়ে খুশির কথা জানিয়ে রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির শিল্পদপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে প্রতিটি দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তারই সুফল এটা। তিনি সব দপ্তরকে উৎসাহিত করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা একনম্বরে রয়েছে, আধুনিক ডিজাইনেও অন্য রাজ্যকে পিছিয়ে দিল তন্তুজ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ডিজাইনে আধুনিকতা নিয়ে আসা হয়েছে। পাথরের উপরে যেসব ডিজাইন থাকে, তা আমরা কাপড়ে তুলে নিয়ে এসেছি। নিঁখুতভাবে কাজের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে শিল্পীও পুরস্কৃত হয়েছেন। যা খুবই আনন্দের বিষয়। এটা সম্মিলিত প্রয়াসের ফসল।
বাম আমলে তন্তুজের মতো সংস্থা ধুঁকছিল। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে তন্তুজের উপর বিশেষ নজর দেন। দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলা ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে প্রথম লাভের মুখ দেখে তন্তুজ। ২০১৫ সালের তন্তুজ ভবনের ষষ্ঠতলায় ‘স্টেট ডিজাইন সেন্টার’ তৈরি হয়। যেখানে নতুন নতুন ডিজাইন তৈরির কাজ হয়। তার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে তন্তুজের ৮৪টি শোরুম রয়েছে। অনলাইনেও বিক্রির সুবিধা রয়েছে। ২০২০-২১ আর্থিক বছরে অনলাইনে বিক্রি করে দু’কোটি টাকা আয় হয়। এ বছর আরও বাড়বে বলে আশাবাদী তন্তুজ কর্তৃপক্ষ। ২০১৫ সালে মার্কেটিং অব হ্যান্ডলুম প্রোডাক্টস বিভাগে প্রথম ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পায় তন্তুজ। হারিয়ে যাওয়া বালুচরী, জামদানির সুক্ষ্মকাজ শুরু করে তন্তুজ। অন্তত ১০ রকমের ডিজাইন করে তারা। যার খুবই চাহিদা রয়েছে এবং প্রশংসিত হয়। গত ১০ বছর তন্তুজের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে সামলেছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রখ্যাত শিল্পীদের নিয়ে এসে ডিজাইনের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে, এটি তারই সুফল।
২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে মাস্ক, পিপিই কিট সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কাজের দায়িত্ব দেয় তন্তুজকে। মাস্ক ও পিপিই কিট তৈরি এবং সংগ্রহ করে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরকে সরবরাহ করার জন্য গত বছর ‘স্কচ প্লাটিনাম অ্যাওয়ার্ড’ পায় তন্তুজ। এবার ফের বস্ত্রমন্ত্রক ডিজাইনের জন্য জাতীয় পুরস্কার দিয়ে তন্তুজকে সম্মানিত করল। যাতে খুবই খুশি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্রনাথ রায় এবং ওই সংস্থা কর্মী-তন্তুবায় শিল্পী। তাঁদের মতে, এই পুরষ্কারপ্রাপ্তি শিল্পীদের আরও উৎসাহিত করবে।