বাঁকুড়ার ডোকরার তৈরি দুর্গা এবার যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া
বাঁকুড়ার ডোকরার তৈরি দুর্গা প্রতিমা এবার পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে। পুজোর কয়েকদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পৌঁছতে হবে প্রতিমা। তাই বাঁকুড়ার বিকনার শিল্প ডাঙায় ব্যস্ততা চরমে উঠেছে। করোনার ধাক্কার পর বিকনায় শিল্পীরা প্রতিমার বরাত পাওয়ায় তাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে।
শহর লাগোয়া বাঁকুড়া-২ ব্লকে দুর্গাপুর ও রানিগঞ্জ যাওয়ার রাস্তায় পড়ে বিকনা। সেখানেই কয়েকশো বছর ধরে তৈরি হচ্ছে ডোকরার সামগ্রী। বর্তমানে প্রায় ৮০টি পরিবার এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই শিল্প দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুখ্যাতি লাভ করেছে। তাছাড়া দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও ডোকরা নজর কেড়েছে।
প্রথমদিকে এখানকার শিল্পীরা বাঁধা ধরা ছকে কিছু কাজ করতেন। এখন অবশ্য সেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির পাশাপাশি মাদল নিয়ে নৃত্যরত আদিবাসী পুরুষ ও নারীর যৌথ সামগ্রী ক্রেতাদের মন কাড়ে। তাছাড়া এখন দেব-দেবীর মূর্তি তৈরিতেও এসেছে অভিনবত্ব। বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহার করে শিল্পীদের নিপুণ হাতে তৈরি হচ্ছে ঢোকরার নানা ঘর সাজানোর সরঞ্জাম।
তবে করোনা পরিস্থিতির জেরে গত বছর থেকে কিছুটা ধাক্কা খান শিল্পীরা। সংক্রমণ এড়াতে জেলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মেলা বন্ধ করা হয়। ফলে ঢোকরার শিল্পকর্ম বিক্রি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে বাঁকুড়ায় ঘুরতে এসে বিকনায় ঢুঁ মেরে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যেতেন। কিন্তু, করোনা আবহে তাঁদের আনাগোনাও কমে যায়। শিল্পীদের দাবি, গত বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য ডোকরার দুর্গা বিদেশ তো দূরের কথা, ভিন রাজ্যেও যায়নি। তারফলে প্রত্যাশিত রোজগার হয়নি। দাম বেড়েছে কাঁচামালেরও। গতবছর পিতলের দাম ছিল প্রায় ৩৩০ টাকা কেজি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৭০টাকা। তাই স্বাভাবিকভাবেই ডোকরার সামগ্রীর দামও বেড়েছে।