গঙ্গাপ্রসাদের দলত্যাগের তিন মাস অতিক্রান্ত, আলিপুরদুয়ারে সভাপতি নিয়োগ করতে ব্যর্থ বিজেপি
গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ঘাসফুল শিবিরে চলে যাওয়ার তিনমাস পরেও আলিপুরদুয়ারে বিজেপি জেলা সভাপতি পদে বিকল্প মুখ খুঁজে পেল না। পদ্ম শিবিরের নিচুতলার কর্মীদের অভিভাবকহীন অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে। জেলায় বিজেপির কর্মসূচিও কার্যত আর হচ্ছে না।
হাল ধরার কাণ্ডারী না থাকায় ভাঙছে দল। দলের জেলা কমিটির সদস্য ক্ষুব্ধ একাধিক নেতা বলেন, অভিভাবক না থাকায় বিধানসভা পরবর্তী দলের এই ধস আটকানো যাচ্ছে না। যদিও দলের জেলা আহ্বায়ক ভূষণ মোদকের দাবি, দল ঐক্যবদ্ধই আছে। জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে গেলে নিচুতলায় কর্মীরা ফের চাঙ্গা হয়ে উঠবেন।
গত লোকসভা ভোটে বিজেপি আলিপুরদুয়ার আসনে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে জিতেছিল। এবারের বিধানসভা ভোটে বিজেপি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফল করে এই জেলায়। জেলার পাঁচটি আসনের পাঁচটিতেই জয়ী হয় বিজেপি। তৃণমূলকে এখানে খালি হাতে ফিরতে হয়।
কিন্তু, ২১ জুন গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বিজেপির জেলা সভাপতি পদ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর জেলায় পদ্মফুল শিবির কার্যত মুখ থুবরে পড়ে বলে বিজেপির নেতা-কর্মীরাই আড়ালে স্বীকার করে নিচ্ছেন। তিনমাস পরও জেলা সভাপতির পদে বিকল্প কোনও মুখ দল খুঁজে পেল না বলে বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে। যদিও দলের জেলা আহ্বায়ক ভূষণবাবু বলেন, জেলায় দলে কোনও সমস্যা নেই। কোনও নেতা তৃণমূলে যাননি। তবে এটা ঠিকই জেলা সভাপতি না থাকলে যেকোনও দলের কর্মীদের মধ্যে একটা ঝিমিয়ে পড়া ভাব আসে। দলের রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা হয়েছে। আশা করছি, রাজ্য নেতৃত্ব এবার জেলার দিকে নজর দেবে। একবার জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে গেলে জেলাজুড়ে আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা ফের চাঙ্গা হয়ে উঠবেন। বিজেপি কর্মীদের প্রশ্ন, জেলা সভাপতি থাকার সময় দলের একাংশ নেতা কথায় কথায় গঙ্গাপ্রসাদবাবুর বিরোধিতা করতেন। আজ দলের কর্মীরা অভিভাবকহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এখন কোথায় দলের সেই নেতারা? বিজেপির জেলা কমিটির এক নেতা বলেন, তৃণমূল জোরকদমে ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ার পুরসভা ভোটের প্রস্তুতি চালাচ্ছে। দলের অভিভাবক না থাকায় আমাদের পুরভোটের প্রস্তুতিও নেই।
বিজেপির একাধিক নেতা স্বীকার করে নিয়েছেন, দলে অভিভাবক না থাকায় জেলাজুড়ে দলের ভাঙন আটকানো যাচ্ছে না। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় দলের পঞ্চায়েত সদস্য ও কর্মীরা রোজই দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। যত দিন যাচ্ছে ততই দলের এই ভাঙন চওড়া থেকে আরও চওড়া হচ্ছে। দলের অভিভাবক না থাকায় জেলায় দল কার্যত সাইনবোর্ডে পরিণত হচ্ছে বলে বিজেপিরই নিচুতলার নেতা-কর্মীরা বলছেন।