বিজেপির বিরুদ্ধে খবর করে রোষানলে বাংলার সংবাদমাধ্যম কলকাতা টিভি
এনডিটিভি, দৈনিক ভাস্কর, নিউজলন্ড্রি, নিউসক্লিক-এর পর এ বার কলকাতা টিভি। বিজেপির রোষানলে বাংলার সংবাদমাধ্যম কলকাতা টিভি। চ্যানেলের সম্প্রচার-স্বত্ত্ব নবীকরণ নিয়ে কলকাতা টিভিকে নোটিস পাঠাল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক।
কেন্দ্রের বক্তব্য, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে অনুমোদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দিয়ে থাকে, তা কলকাতা টিভির ক্ষেত্রে খারিজ হয়ে গিয়েছে। যদিও কী কারণে তা খারিজ হয়েছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। কেন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে না, ৭ দিনের মধ্যে তার জবাব তলব করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক।
নোটিসে জানানো হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনুমোদনের আবেদন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অমিত শাহ-নিশীথ প্রামানিকের মন্ত্রক সেই অনুমোদন দিতে চাইনি। সে কারণেই কলকাতা টিভির আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে গোটা বিষয় প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিজেপির দমন-পীড়নের নীতির বিরুদ্ধে একযোগে সরব হয়েছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল। সবার একটাই প্রশ্ন, শাসকের তাবেদারি না করলেই কি সংবাদমাধ্যমের উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে?
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন টুইটে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, যখন টিভি চ্যানেল, সংবাদপত্র এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সাংবাদিকেরা সত্য উন্মোচন করে এবং মোদির বিজেপি সরকারের তোষামোদ করে না, তখন তার ফলাফল এটাই হয়। গণমাধ্যম একজোট হোক।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর বলেন, চতুর্থ স্তম্ভ অনুষ্ঠানটি আমি নিয়মিত দেখি। এখানে যথেষ্ঠ নিয়ম মেনে সমালোচনা করা হয়। কিন্তু ফ্যাসিবাদীদের মতো কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অধীর চৌধুরীও বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কোনও নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান পছন্দ নাই হতে পারে। কিন্তু সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া কাম্য নয়। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের মতে, শিরদাঁড়া সোজা রেখে সংবাদ পরিবেশন করে আসছে এই চ্যানেল। তাই কি কেন্দ্রের রোষানলে?
রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে মোদি সরকার। বিজেপি চায় যে চ্যানেল তাদের তাবেদারি করবে না, সেই চ্যানেল মানুষের কাছে যাতে না পৌঁছয়। চতুর্থ স্তম্ভ অনুষ্ঠান মানুষের কথা বলে, তাই কেন্দ্রের গাত্রদাহ।