রাজ্যের দুর্গম ও ধর্মীয় স্থানে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করবে রাজ্য
বাংলার বিভিন্ন দুর্গম ও ধর্মীয় স্থানে হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পর্যটন ক্ষেত্রে রাজ্যকে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে দিতে এই নয়া প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সূত্রের দাবি, হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু হলে সুন্দরবন, সাগর, ডুয়ার্স, দার্জিলিং, কালিম্পং সহ একাধিক স্থানে নিমেষে চলে যাওয়া যাবে। সড়ক কিংবা ট্রেনপথের ঝক্কি এড়িয়ে আকাশপথে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পাড়ি দেওয়ার সুযোগ তৈরি হতে চলেছে বাংলায়। সরকারি সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে আট থেকে দশ আসন বিশিষ্ট হেলিকপ্টার রাজ্যের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার দুই কিংবা চারজন যাত্রীর ‘গ্যারান্টার’ হবে। অর্থাৎ হেলিকপ্টারের সব আসন বুকিং না হলে সংশ্লিষ্ট সিটের ভাড়া মেটাবে নবান্ন। জানা গিয়েছে, পর্যটকদের জন্য হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই আর্থিক সহায়তা করতে চলেছে। নবান্ন সূত্রের খবর, এই ফাইল এখন অর্থদপ্তরের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। খুব শীঘ্রই তা মঞ্জুর হলে বাংলায় ‘হেলি-ট্যুরিজম’ কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, দেশে পর্যটনের নয়া দিক উন্মোচনে ‘হেলি-ট্যুরিজম’ নীতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিছুদিন আগে নবান্নে সেই নীতির খসড়া পাঠায় দিল্লি। তাতে বেশ কিছু পরিবর্তন ও পরিমার্জনের সুপারিশ করেছে রাজ্য। এ প্রসঙ্গে নবান্নের এক শীর্ষ আমলা বলেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পর্যটন শিল্পের প্রসারে একাধিক পদক্ষেপ করেছেন। করোনা পরবর্তী সময়ে দ্রুত ও আরামদায়কভাবে আকাশপথে পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছনোর নয়া সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। দিল্লি থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আসতেই লুফে নেয় নবান্ন। তবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে একাধিক সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে শীঘ্রই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী ওই আমলা।
জানা গিয়েছে, গোটা বিষয়টি দেখভাল করবে কপ্টার পরিচালনায় পারদর্শী কোনও বেসরকারি সংস্থা। এক্ষেত্রে সংস্থা বাছাই করা হবে টেন্ডার ডেকে। জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও তাতে অংশ নিতে পারবে। জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টারগুলি রাখা হবে কলকাতা বিমানবন্দরে। অন্যদিকে, বাগডোগরা বিমানবন্দরে থাকবে উত্তরবঙ্গের আকাশে চক্কর কাটার জন্য বরাদ্দ হেলিকপ্টারগুলি। রাজ্য সরকার একাধিক বিষয়ে আকর্ষণীয় ছাড় দেবে। এছাড়াও অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকও একাধিক আর্থিক সুযোগ দেবে। বিমানবন্দরগুলি হেলিকপ্টার রাখার জায়গা, ল্যান্ডিং চার্জ, সার্ভিস চার্জ সহ একাধিক ক্ষেত্রে ছাড় দেবে বলে জানা গিয়েছে। এমনকী বিমানবন্দরগুলিতে আলাদা পথ রাখা হবে হেলিকপ্টারের যাত্রীদের জন্য। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের আরেক কর্তা বলেন, অনেকে বয়সের ভারে কিংবা পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থানগত কারণে বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারেন না। রাজ্য সরকার চাইছে, সেইসব জায়গায় হেলিকপ্টার চালিয়ে এই প্রতিকূলতাকে দূর করতে।