যোগী রাজ্যে ‘রহস্য’ মৃত্যু ব্যবসায়ীর, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি বিরোধীদের
ব্যবসায়ী মণীশ কুমার গুপ্তের রহস্যমৃত্যু নিয়ে উত্তাল উত্তরপ্রদেশ। পুলিসের দাবি, গোরক্ষপুরের হোটেলে তল্লাশির সময় জ্ঞান হারান কানপুরের ব্যবসায়ী মণীশ। মাটিতে পড়ে গিয়ে তাঁর মাথায় চোট লাগে। তাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যবসায়ীর। অন্যদিকে পরিবারের দাবি, খুনই করা হয়েছে মণীশকে। ঘটনা যাই হোক না কেন, মণীশের মৃত্যুতে বেজায় বিপাকে পড়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উপর চাপ বাড়ছে। তাছাড়া তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্র গোরক্ষপুরেই মণীশের মৃত্যু হওয়ায় বিরোধীদের আক্রমণের যাবতীয় টার্গেট তিনিই। ঘটনার নিন্দা করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদবের খোঁচা, ‘বিজেপির শাসনে রাজ্যে এনকাউন্টারের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। তার বলি এই তরুণ ব্যবসায়ী।’
মণীশকে খুনে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন অখিলেশ। একই সঙ্গে তিনি নাম না করে যোগী আদিত্যনাথের ইস্তফা চেয়ে বলেছেন, ‘রাজ্যকে যারা হিংসার দিকে ঠেলে দিয়েছে, তাদের পদত্যাগ করা উচিত।’ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর টুইট, ‘গোরক্ষপুরে পুলিসের পিটুনিতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। এতে রাজ্যের সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। জঙ্গলের আইনের শাসনে পুলিস অপরাধীদের প্রতি সহৃদয় আর সাধারণ মানুষের উপর খড়্গহস্ত।’ ক্ষোভ প্রশমনে মৃত ব্যবসায়ী মণীশের স্ত্রী মীনাক্ষি গুপ্তের সঙ্গে কথা বলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর পরিবারকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাছাড়া, গোরক্ষপুরের ছয় অভিযুক্ত পুলিসকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন থানার এসএইচও। ঘটনার পরই তারা গাঢাকা দেয়। তাদের ধরতে তল্লাশি শুরু করেছে বলে পুলিস জানিয়েছে। যদিও এতে বিতর্ক থামছে না।
অভিশপ্ত রাতে মণীশের সঙ্গেই ছিলেন তাঁর বন্ধু তথা ব্যবসার সহযোগী হরবিন্দর সিং। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সোমবার মণীশ, তিনি এবং আর এক বন্ধু ব্যবসার কাজে গোরক্ষপুরের সিকরি বাজারের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। ওইদিন রাত একটা নাগাদ হোটেলের এক কর্মীকে নিয়ে তাঁদের ঘরে তল্লাশি চালায় ৫-৭ জন পুলিস। তাঁদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলা হয়। এত রাতে পুলিস কেন হোটেলে ঢুকেছে জানতে চাওয়ায় পুলিসের সঙ্গে বচসা শুরু হয় মণীশের। এরপর বাকি দু’জনকে ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরে রক্তাক্ত মণীশকে ঘর থেকে বার করে পুলিস। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মণীশকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। কয়েকজন পুলিসকর্মী মদ্যপ ছিল বলেও তাঁর দাবি। মণীশকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর স্ত্রীরও।