২৭ হাজার অসংগঠিত শ্রমিককে গত ৩০ দিনে ১৫৪ কোটি টাকার সুরাহা রাজ্যের
পোর্টাল বিভ্রাটের দরুণ প্রায় দেড় বছর ধরে রাজ্য সরকারের নানা ধরনের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন বাংলার বহু অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার। প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, মৃত্যুকালীন ও দুর্ঘটনাজনিত আর্থিক সহায়তার মতো খাতে শ্রমিকদের প্রাপ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে পারছিল না শ্রমদপ্তর অনেক উদ্যোগ গ্রহণ সত্ত্বেও। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবং শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার বিশেষ চেষ্টায় সেই জট কাটিয়ে চলতি সেপ্টেম্বরে প্রায় ১৫৪ কোটি টাকার সুরাহা পৌঁছে দিল দপ্তর। দপ্তরের এই চেষ্টায় উপকৃত হলেন প্রায় ২৭ হাজার শ্রমিক বা তাদের পরিবার। মাত্র ৩০ দিনে এই বিরাট অঙ্কের অর্থ নানা ক্ষেত্রের অসংগঠিত শ্রমিক বা তাদের পরিবারের নির্দিষ্ট সদস্যের (নমিনি) অ্যাকাউন্টে পাঠানোর নজির শ্রমদপ্তরের ইতিহাসে রেকর্ড বলে দাবি করেছেন আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সদ্য শেষ হওয়া দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে রাজ্যে সংঘটিত ক্যাম্পগুলি সাড়ে ২২ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে পিএফ খাতে মোট ১৮৬.০৮ কোটি টাকা জমা করার ব্যবস্থা করেছে দপ্তর।
বৃহস্পতিবার মাসের শেষদিনে দপ্তরের এই সাফল্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে অবহিত করেন শ্রমমন্ত্রী। তিনি বলেন, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য বিবিধ সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধাকে তৃণমূল জমানায় অনেক প্রসারিত করা সম্ভব হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছায়। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এই প্রকল্পের আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া চালু করা হয় তাঁরই উদ্যোগে। নাম বদলে তা হয় বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পোর্টালটির যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে শ্রমিকরা বিভিন্ন খাতে তাদের প্রাপ্য আবেদন অনলাইনে করতে পারছিল না। সেই কারণে পিএফ, পেনশন সহ অন্যান্য খাতে তাদের অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকাও পৌঁছনো যাচ্ছিল না। অথচ এই সময়ের মধ্যে আমার কাছে বহু আবেদন ও অভিযোগ আসছিল। কোভিডের কারণে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকবা তাদের পরিবারগুলির আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট সঙ্গীন হয়েছে। তাদের এই দুরবস্থায় প্রাপ্য বকেয়া মেটানো দপ্তরের কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। শেষ পর্যন্ত এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে আগস্ট মাসে দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আমি স্পষ্ট নির্দেশ দিই যে সেপ্টেম্বরের ৩০ দিনে অনলাইন এবং অফলাইন মিলিয়ে যথাসম্ভব বকেয়া আবেদনপত্র বাবদ শ্রমিকদের প্রাপ্য অর্থ তাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিতে হবে।
দপ্তর সূত্রের খবর, বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা সংক্রান্ত পোর্টাল জটিলতা কিছুটা কাটলেও এখনও তা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। হায়দরাবাদের যে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে এই পোর্টালের বিষয়ে দপ্তরের চুক্তি হয়েছিল এদিনই তার মেয়াদ শেষ হয়। দপ্তর ওই সংস্থার সঙ্গে আর চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে না। পরিবর্তে এনআইসির উপরই এই পোর্টালের জন্য ভরসা করছে তারা। পাশাপাশি ওয়েবেলেরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।