শিলিগুড়ির আরও ৪৪২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১১ কোটির বেশি টাকা ঋণ
শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকায় ৪৪২টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ব্যাঙ্ক ঋণ বাবদ দেওয়া হল আরও ১১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। মঙ্গলবার গ্রামীণ এলাকায় ছ’টি ক্যাম্প করে এই বিপুল পরিমাণ ঋণ প্রদান করা হয়েছে। দু’দিনে মহকুমায় ঋণ প্রদানের পরিমাণ প্রায় ১৬ কোটি টাকা। কিন্তু, সেই তুলনায় অনেকটাই পিছনে রয়েছে শিলিগুড়ি শহর। এবার এখনও পর্যন্ত শহর এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে ঋণ প্রদানের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। শহর ও গ্রামীণ এলাকার এমন পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার শিবমন্দির, নকশালবাড়ি, বিধাননগর, ফাঁসিদেওয়া, বাগডোগরা, বাতাসি, এই ছ’টি এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে ঋণ প্রদান শিবির করে জেলা গ্রামোন্নয়ন সেল। সংশ্লিষ্ট সেলের প্রকল্প আধিকারিক অরবিন্দ ঘোষ, ডেপুটি প্রোজেক্ট ডিরেক্টর প্রদীপ রায়, লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার রৌসন কুমার সহ ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন ছ’টি ক্যাম্প থেকে ৪৪২টি গোষ্ঠীকে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। তারা ঋণ বাবদ পেয়েছে ১১ কোটি ৪১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৪৪২০ জন মহিলা। তাঁরা পোশাক, সব্জি, নার্সারি প্রভৃতি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এ নিয়ে পরপর দু’দিনে ৫৭৯টি গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে ১৬ কোটি ৪৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। পুজোর মুখে সংশ্লিষ্ট মহিলারা রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তাঁদের একাংশ বলেন, এক থেকে দু’শতাংশ সুদে গোষ্ঠীর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারব। এতে ব্যাপক উপকার হবে।
প্রশাসনের আধিকারিকরাও এ নিয়ে খুশি। জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের আধিকারিকরা বলেন, ২০২১-’২২ আর্থিক বছর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ঋণ প্রদানের যে টার্গেট আছে, তা বছর শেষ হওয়ার আগেই পূরণ হবে বলে আশা করছি। পাশাপাশি গোষ্ঠীগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ মেটালে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সুদের উপর সাড়ে পাঁচ শতাংশ এবং রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তিন শতাংশ টাকা ভর্তুকি বা ছাড় পাবে। এতে গোষ্ঠীগুলির সুদের পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে।
অন্যদিকে, গ্রামের তুলনায় শিলিগুড়ি শহরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ঋণ প্রদানের হার অনেকটাই কম। এ ব্যাপারে পুর কর্তৃপক্ষ জোর দিয়েছে। দু’দিন আগেই তারা এ বিষয়ে বৈঠক করেছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন গোষ্ঠী তৈরি, গোষ্ঠীগুলিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা, ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদানে উদ্যোগ নেওয়া প্রভৃতি কাজের জন্য ১৭ জন কমিউনিটি সার্ভিস প্রোভাইডার নিয়োগ করা হয়েছে। তবে এবার এখনও পর্যন্ত শহরে ৮০টি গোষ্ঠীকে ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদানের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। শীঘ্রই আরও ১৩০টি গোষ্ঠী গঠন করা হবে। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার বলেন, স্বনর্ভির গোষ্ঠী গঠন এবং সেগুলিকে ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদানের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।