দেশ বিভাগে ফিরে যান

অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিকে বেসরকারিকরণের বিরোধিতায় সঙ্ঘও, চাপ রাজনাথের ওপর

October 2, 2021 | 2 min read

শত সমালোচনা এবং আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার শুক্রবার ১ অক্টোবর থেকে দেশের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির সরকারি সংস্থা অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের অস্তিত্ব তুলে দিল। বোর্ডের সদর দপ্তর ও তার অধীনে থাকা ৪১টি কারখানাকে এদিন থেকে সাতটি সরকারি কোম্পানির আওতায় এনে আগামীদিনে এই ক্ষেত্রে ঢালাও বেসরকারি বিনিয়োগের পথ খুলে দিয়েছে তারা। এমনকী, বিদেশি পুঁজিকে ডেকে আনতে কার্যত খোলা হয়েছে দরজাও। যা নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এব্যাপারে প্রথম থেকেই সংস্থার কর্মীদের বক্তব্যকে আমল দেয়নি সরকার। শুধু তাই নয়, কর্মচারী সংগঠনগুলি যাতে এ ব্যাপারে আন্দোলন বা ধর্মঘটের রাস্তায় না হাঁটতে পারে, সেজন্য কড়া আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। এই অবস্থায় সংগঠনগুলি সম্প্রতি কর্মচারীদের মনোভাব জানতে গণভোটের আয়োজন করে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বামপন্থীদের পাশাপাশি এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে আরএসএস-এর শ্রমিক সংগঠন বিএমএস’ও। গণভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, ৯৯.৪০ শতাংশ কর্মচারী মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। কর্মচারী সংগঠনগুলির মোট পাঁচটি ফেডারেশন গণভোটের ফলাফল জানিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সহ মোদী মন্ত্রিসভার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে। একইসঙ্গে সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

বাম-বিএমএস সহ পাঁচটি ফেডারেশনের তরফে কয়েকদিন আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তাদের কাছে এই ধরনের গণভোটের ব্যবস্থা করতে দাবি জানানো হয়। সংস্থা ও নিজেদের উন্নতির স্বার্থে কর্মচারীদের অনেকেই নাকি প্রতিরক্ষা শিল্পকে এভাবে কর্পোরেট সংস্থায় ভেঙে দেওয়ার পক্ষে রয়েছে— সরকারের এই প্রচার সঠিক কি না, তা যাচাই করতেই গণভোটের দাবি জানায় সংগঠনগুলি। কিন্তু সরকার সেই দাবি মানেনি। ফলে সংগঠনগুলি নিজেরাই এই উদ্যোগ নেয়। গত ১৩ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের ৪১টি কারখানা ও কলকাতায় অবস্থিত বোর্ডের সদর দপ্তর আয়ুধ ভবনের গ্রুপ-বি এবং সি কর্মীদের গণভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে তারা। কোথাও দু’টি মতের আবেদনপত্রে সই করে, কোথাও আবার পক্ষে ও বিপক্ষের দু’টি বাক্স রেখে এই ভোট নেওয়া হয়। শিল্প-সম্পর্কের পরিভাষায় যাকে ‘রেফারেন্ডাম’ বলা হয়।

কী বলছে এই গণভোটের ফল? রাজনাথ সিংকে পাঠানো চিঠিতে সংগঠনগুলি বলেছে, সাধারণ কর্মীদের সিংহভাগই এই গণভোটে অংশ নিয়েছিল। দু’টি ক্যাটিগরি মিলিয়ে মোট ৭০ হাজার ৫১৫ জন কর্মী রয়েছেন। তার মধ্যে গণভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন ৬১ হাজার ৫৬৪ জন। সরকারি প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানিতে পরিণত করার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দিয়েছে ৬১ হাজার ১১৯ জন। শতাংশের হিসেবে যা ৯৯. ৪০। সরকারের পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন মাত্র ৩৬৫ জন কর্মী।  বাম বা বিএমএস-এর বক্তব্য, কংগ্রেস সমর্থিত আইএনটিইউসি রহস্যজনকভাবে আন্দোলনের মাঝপথে পিছু হটে সরকারের পাশে দাঁড়ানোয় অনেকেই ভেবেছিলেন যে, মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে রয়েছে অনেক কর্মচারী। কিন্তু কেন্দ্রের দাবিতে জল ঢেলে বাকি কর্মীরা একজোট হয়েই রায় দিয়েছেন গণভোটে। এখন সরকার কী বলে সেটাই দেখার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#RSS, #rajnath singh, #Ordnance Factory

আরো দেখুন