কিছুটা স্বস্তি, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে কমল শিশু মৃত্যুর হার
অবশেষে কিছুটা স্বস্তি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর হার কমল। গত ২৪ ঘণ্টায় চার জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজনই জ্বর, শ্বাসকষ্ট অর্থাৎ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনে (এআরআই) মারা গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আট মাস বয়সের ওই কন্যা শিশুটির বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপডায়।
শুক্রবার ছ’জন, বৃহস্পতিবার সাত জন শিশুর মুত্যুতে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সেই তুলনায় এদিন চার জন শিশু মারা যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে সব মহলেই। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান মধুমিতা নন্দী বলেন, শুনতে অমানবিক মনে হলেও এটাই বাস্তব যে কোনওদিনই মৃত্যু শূন্যতে নামিয়ে আনা যাবে না। সেক্ষেত্রে সর্বস্তরেই লক্ষ্য থাকে মৃত্যুর হার অর্থাৎ সংখ্যা কমিয়ে আনা। সেদিক থেকে এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট শিশু মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই নেমে এসেছে। যা পরিস্থিতি অনূকূল হওয়ার বার্তা দিচ্ছে। এআরআই- এ মৃত্যুর সংখ্যা গত দু’দিন একে নেমে এসেছে এটা বড় স্বস্তি হতে পারে। কেননা গত এক মাস ধরে সর্বত্রই শিশুদের জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছিল। এতে কিছুটা হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।
এআরআইতে মৃত্যুর সংখ্যা কমার পাশাপাশি সুস্থতার হারও বেড়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২০ জন এআরআই সংক্রামিত শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ১৮ জন সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শিশু ভর্তির সংখ্যাও কমেছে। ৩৮ জন শিশু নতুন করে ভর্তি হয়েছে। তারমধ্যে মাত্র ছ’জন এআরআই সংক্রামিত শিশু রয়েছে। পাঁচ জনই এসেছে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে চার জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে সাধারণ ব্যধিতে। যেমন কোচবিহারের মাথাভাঙার ছ’মাসের একটি শিশু জটিল হৃদরোগে মারা গিয়েছে। মধুমিতা নন্দী বলেন, আর একজন সদ্যোজাত মারা গিয়েছে হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম থাকায়। কাজেই শিশুটি যখন এখানে এসেছিল তার বাঁচার মতো অবস্থা ছিল না। আমরা এখানে বেশিরভাগ রেফার কেসে এধরনের শিশুই পাচ্ছি। তবু এখানে উন্নত চিকিৎসা পরিকাঠামো ও ডাক্তার থাকায় আমরা প্রতিটি শিশুকেই বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, সারা বছরই এধরনের জটিল পরিস্থিতি নিয়ে আসা ছোট শিশুরা মারা যায়। এটা রেফারেল সেন্টার তাই এধরনের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো এখনও হয়নি। করেনা সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কের মাঝে শিশুদের জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্তের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবার সর্বস্তরেই এনিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।