সোম-মঙ্গলেও উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
শনি ও রবিবারের মতোই উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় আজ, সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই জেলাগুলোতে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রাও কিছুটা নিম্নমুখী হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
সিকিম আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক ডঃ গোপীনাথ রাহা রবিবার বলেন, আগামী দু’দিন ধরে জলপাইগুড়ি,আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরমধ্যে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে বৃষ্টি বেশি হতে পারে।
একইসঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হবে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েও। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণ হিসেবে গোপীনাথবাবুর ব্যাখ্যা, চলতি মাসের পয়লা তারিখে বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় যে নিম্নচাপ অবস্থান করছিল, সেটা এখন বিহার এবং সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের উপর অবস্থান করছে। আবার এর দোসর হিসেবে বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে নিম্নচাপ অক্ষরেখা উত্তরবঙ্গ থেকে ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে আছে। যার ফলে এই দুর্যোগ। তিনি অবশ্য আশার কথাও শুনিয়েছেন। বলেছেন, বুধবার মহালয়ার দিন থেকে দ্রুত বৃষ্টিপাত কমে গিয়ে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে শনি এবং রবিবার জলপাইগুড়িতে দফায় দফায় অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। কালো মেঘ ছেয়ে আছে আকাশে। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘন্টায় জলপাইগুড়িতে ৮৯.২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ময়নাগুড়ি ও বানারহাটে যথাক্রমে ৫৫ ও ৪০.৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কোচবিহার ৯৬.৪০, আলিপুরদুয়ার ৮২.২০, শিলিগুড়ি ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টি হয়েছে মালবাজার ও হাসিমারায়। যথাক্রমে ২৭.৩০ ও ৫.৬০ মিলিমিটার।
আবার মাথাভাঙা ১১২.৪০ ও তুফানগঞ্জ ৯০.৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, গত বছর এই সময়ে জেলায় মোট বৃষ্টি হয়েছিল ৪৩০৬.১০মিলিমিটার। সেখানে এবার এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ২৫৫৪.৭০ মিলিমিটার। প্রায় ৪০ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
একইসঙ্গে জানা গিয়েছে তিস্তা, জলঢাকা, ডায়নার মতো নদীগুলোতে এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে জলস্তর বাড়েনি। তিস্তা ব্যারেজে এদিন সকাল থেকে প্রতি ঘন্টায় ৭০০ কিউসেক করে জল ছাড়া হয়েছে। যা অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই। এখনও পর্যন্ত নতুন করে নদীর জল কোনও এলাকায় ঢোকেনি।
এদিকে, ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার দু’পারের অসংরক্ষিত এলাকায় যেখানে বাঁধ নেই, সেই জায়গাগুলোতে জেলা প্রশাসনের তরফে নজর রাখা হয়েছে। দফায় দফায় মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে প্লাবন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। জেলার এসডিও ও বিডিওরা ব্লক ও পঞ্চায়েতস্তরে প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছেন। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুও আগেই এ ব্যাপারে সমস্ত দপ্তরকে নিয়ে বৈঠক করেছেন।