মমতার বিধায়ক হিসেবে শপথ ভেস্তে দিতে চায় রাজভবন?
ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এবার আসে শপথ নেওয়ার পালা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, তিনি মহালয়ার পর শপথ নিতে চান। রাজ্যের আরও দুই কেন্দ্রে জিতেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বিধায়ক। তাঁদেরও শপথবাক্য পাঠ করাতে হবে। কিন্তু শপথবাক্য পাঠ করাবেন কে? এই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এমনকী তৈরি হয়েছে জটিলতা। এই জটিলতার অন্যতম কারণ সেই রাজ্য–রাজভবন দ্বৈরথ।
সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবার দায়িত্ব রাজ্যপালের। তবে তিনি চাইলে অন্য কাউকে দিয়েও শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন। অর্থাৎ বিধানসবার স্পিকার। তাই সপ্তদশ বিধানসভার ক্যাবিনেট সদস্যরা যেদিন শপথ নেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান। আর বাকি বিধায়কদের ক্ষেত্রে বিধানসভায় পোর্টেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুধু শপথবাক্য পড়িয়েছিলেন জগদীপ ধনখড়।
তারপর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তিনি বাকি বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর অধিকার দেন। তখন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শপথবাক্য পাঠ করান। কয়েকদিন আগে রাজভবন থেকে বিধানসভার সচিবালয়ে একটি চিঠি আসে। যেখানে লেখা আছে, অধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করানোর যে অধিকার রাজ্যপাল দিয়েছিলেন, তা তিনি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। সুতরাং নতুন বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপালই।
পরিস্থিতি ঘোরালো হতে পারে আঁচ করে বিধানসভা থেকে পাল্টা রাজভবনে চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে লেখা হয়, যে কোনও রাজনৈতিক দলের যে কোনও প্রতিনিধি বিধায়ক পদে জিতে শপথ নিতে আসতে পারেন। তাই এই প্রত্যাহার করা ক্ষমতা যেন অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিধানসভার এই চিঠির জবাব রাজভবন দেয়নি। এদিকে নতুন নির্বাচিত তিন বিধায়ক হয়েছেন– মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ভবানীপুর), জাকির হোসেন (জঙ্গিপুর), আমিরুল ইসলাম (সামশেরগঞ্জ)। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে নতুন বিধায়কদের শপথবাক্য কে পড়াবেন?
এই প্রশ্ন উঠছে, কারণ রাজভবন থেকে কোনও সবুজ সংকেত মেলেনি। রাজ্যপালের কোনও টুইট প্রকাশ্যে আসেনি এবং বিধানসভায় তিনি কোনও চিঠি পাঠাননি। এই বিষয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিধায়ক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় শপথ নিন। সেটাই কাম্য। তবে এখনও রাজ্যপাল কোনও অনুমতি দেননি।’