রাজ্যের সবচেয়ে বড় অক্সিজেন প্লান্ট চালু হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে
আজ সোমবার থেকে রাজ্যের সবচেয়ে বড় অক্সিজেন প্লান্ট চালু হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এর জন্য কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, প্লান্টটির জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন পাইপ লাইন, ডিজেল জেনারেটর প্রভৃতি আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি কিনতেই খরচ হয়েছে কোটি টাকারও বেশি। রবিবার এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, এদিন দিনভর চূড়ান্ত পর্বের কাজ হয়েছে। ট্রায়াল রান হয়েছে। আমরা প্রস্তুত। সোমবার থেকে প্লান্টটির কাজ চালু হয়ে যাবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রের খবর, এই পিএসএ (প্রেশার সুইং অ্যাডসর্বশন) অক্সিজেন প্লান্টটি ২০০০ এলপিএম ক্ষমতাবিশিষ্ট। এলপিএম অর্থাৎ ‘লিটার পার মিনিট’। প্রতি মিনিটে দু’হাজার লিটার অক্সিজেন তৈরির ক্ষমতা রাখছে প্লান্টটি। কর্তৃপক্ষের দাবি, এত অল্প সময়ে পরিবেশ থেকে বাতাস নিয়ে এত পরিমাণে অক্সিজেন তৈরির ক্ষমতা রাজ্যের কোনও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেরই নেই।
প্রসঙ্গত, দেড় বছরের কোভিড পর্ব ও মাঝে করোনার দুটি ঢেউ রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরকে প্রতি মুহূর্তে বুঝিয়েছে, বিপদের সময় দ্রুত অক্সিজেন পাওয়া কতটা জরুরি। লকডাউন ও নানা কোভিড বিধির কড়াকড়ির মধ্যে লরিতে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা যে আসলে প্রাগৈতিহাসিক বন্দোবস্ত, তাও বুঝেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। শুধু তাই নয়, রাস্তাঘাটে তাদের দেরি হলে তার ফল যে কতটা মারাত্মক হতে পারে, তাও বোঝা গিয়েছে। তাই সিলিন্ডার ব্যবস্থার বদলে রোগীর বেডে বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন পাইপ লাইন পৌঁছে দেওয়া এবং সেখানে অক্সিজেনের জোগান ঠিক রাখতে অক্সিজেনে স্বয়ম্ভর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখন প্রশ্নাতীত। রাজ্য সেকারণে সিদ্ধান্ত নেয় সমস্ত জেলা হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট বসবে।
কী কী কাজে লাগবে প্লান্টটি? এক, বর্তমানে করোনা রোগীর সংখ্যা কমলেও, রাজ্যে নতুন ভাইরাস স্ট্রেইন এলে, যেকোনও মুহূর্তে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে। তাই উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় হাসপাতালে অক্সিজেনের জোগান পর্যাপ্ত থাকা জরুরি। দুই, যতদিন যাচ্ছে দূষণ, ধূমপান, জীবনযাপনের কুঅভ্যাস ইত্যাদি কারণে বুকে সংক্রমণ, সিওপিডি, এমফিসিমা, ফুসফুসের ক্যান্সার বাড়ছে। হাসপাতালে ভর্তি হলে এইসব রোগীদের অনেকেরই অক্সিজেনের দরকার পড়ছে। তিন, বর্তমানে গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে আরএসভি, ইনফ্লুয়েঞ্জা বি প্রভৃতি ভাইরাসের উপদ্রবে কাহিল বহু শিশু। অনেকেরই তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে। লাগছে অক্সিজেন। সব সমস্যারই মুশকিল আসান হতে পারে পিএসএ প্লান্টটি।