ভিন রাজ্যে ও বিদেশে আলু পাঠাতে পরিবহণ খাতে ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার
ভিন রাজ্যে ও বিদেশে আলু পাঠাতে পরিবহণ খাতে ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার। রেলে ভিন রাজ্যে ও কলকাতা বন্দর থেকে জাহাজে বিদেশে আলু পাঠালে প্রতি কুইন্টালে ১০০ টাকা হারে ভর্তুকি দেওয়া হবে। ভিন রাজ্যে লরিতে আলু পাঠালে কুইন্টালে ৫০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে। রেল ও সড়কপথে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানে আলু পাঠালেও যথাক্রমে ১০০ ও ৫০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে কৃষি বিপণন দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এবার রাজ্যে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। বেশি ফলনের জন্য লাভজনক দাম চাষিরা পাচ্ছেন না বলেই মূলত পরিবহণ খাতে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এর ফলে হিমঘর থেকে আলু বেরনোর পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে চাষিদের কিছুটা বেশি দাম পাওয়ার সুযোগ হতে পারে। এর আগেও অধিক ফলন জনিত সমস্যার সময় একই হারে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের হিমঘরগুলিতে এখনও প্রায় ৩২ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। নতুন আলু ওঠার পর মার্চ মাসে প্রায় ৭২ লক্ষ টন আলু হিমঘরে ঢোকানো হয় বলে ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিকদের সংগঠনগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হিমঘর চালু থাকে। অতীতে বিশেষ পরিস্থিতিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত হিমঘর চালানোর বিশেষ অনুমতি সরকার দিয়েছে। কিন্তু এবারও সেটা দিলে আরও তিনমাসের মধ্যে ৩২ লক্ষ টন আলু ব্যবহার করা খুবই কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভিন রাজ্যে বা বিদেশে আলু বেশি পরিমাণে পাঠাতে পারলে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া যাবে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারি পরিবহণ ভর্তুকি দেওয়ার ফলে কিছুটা সুবিধা হবে। ভিন রাজ্যে বেশি পরিমাণে আলু যাবে বলে তাঁদের আশা। তবে বিদেশে, এমনকী প্রতিবেশী বাংলাদেশে আলু পাঠানোর আশা ক্ষীণ। এখন হিমঘর থেকে প্রতি কেজি জ্যোতি আলুর বন্ড ৫-৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সব খরচ মিটিয়ে আলু বের করলে দাম পড়ছে ১০ টাকার আশপাশে। ওই আলু খুচরো বাজারে ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার রাজ্যে আলুর ব্যাপক ফলন হওয়ায় নতুন ফসল ওঠার পর দাম বেশি ওঠেনি। পরে ভালো দাম পাবেন এই আশায় বহু চাষি হিমঘরে আলু রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সেই আশা এখন নিরাশায় পরিণত হয়েছে। নতুন আলু ওঠার পর যে দাম পাওয়া যাচ্ছিল হিমঘরে রাখা আলুর বন্ড বিক্রি করে সেই দামও মিলছে না। ৫০ কেজি আলুর বস্তার বন্ড ২৫০ থেকে বড়জোর ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ কেজিতে দাম পাওয়া যাচ্ছে ৫-৬ টাকা। বেশিরভাগ চাষি আলুর বন্ড ব্যবসায়ীদের বিক্রি করে দেন। তারপর ব্যবসায়ীরা হিমঘরের ভাড়া মিটিয়ে ও অন্যান্য খরচ করে তা বিক্রি করেন। আলুর চাহিদা বৃদ্ধি জন্য রাজ্য সরকার আগস্ট থেকে মিড ডে মিলে ছাত্রপিছু আলু দেওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে ২ কেজি করেছে। তাতে হিমঘর থেকে আলু বেরনোর পরিমাণ কিছুটা বাড়ে। নতুন পদক্ষেপে আলু আরও বেশি পরিমাণে বের হয় কি না সেটাই এখন দেখার।