নজরুল মঞ্চে দিদির সামনে গানের কথা ভুল গাইলেন বাবুল সুপ্রিয়
বলিউডে তাঁর ডেবিউটা ছিল সুপার ডুপার হিট। কহোনা প্যার হ্যায় ছবির টাইটেল ট্র্যাকে তাঁর সুরের মূর্ছনা উন্মাদনা তৈরি করে দিয়েছিল। সেই তিনি বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) তৃণমূলের (TMC) বড় মঞ্চে প্রথম দিনই গান গাইতে গিয়ে কিছুটা যেন ঘেঁটে গেলেন।
দর্শকাসনে সামনের সারিতে তখন বসে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, নচিকেতা-সহ রাজ্যের মন্ত্রী, সাংসদ, বিশিষ্ট জনেরা। জাগোবাংলার উৎসব সংখ্যা প্রকাশে তখন পরপর শিল্পীরা নজরুল মঞ্চে গান গাইছেন। বেশির ভাগই দিদির লেখা ও সুর করা গান গাইছিলেন। বাবুল সদ্য তৃণমূলে এসেছেন। তাই হয়তো সেই ঝুঁকি নেননি। একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল বাংলা-বাঙালির আবেগের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। বাবুল হয়তো সেসব সাত-সতেরো ভেবেই প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কালজয়ী গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গাইলেন। কিন্তু তা ভুলে ভরা।
‘বাংলা আমার জীবনানন্দ, বাংলা প্রাণের সুখ/ আমি একবার দেখি বারবার দেখি, দেখি বাংলার মুখ।’
শুরুর দিকেই সেই জায়গা গাইতে গিয়ে বাবুলের গলায় বাংলা প্রাণের সুখের জায়গায় হয়ে গেল বাংলা গানের সুর। এই জায়গাটা তবু নয় মানা গেল। কিন্তু তারপর?
‘আমি বাংলায় ভালবাসি, আমি বাংলাকে ভালবাসি/ আমি তারই হাত ধরে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে আসি!’
এই জায়গাটা বাবুল গাইতে গিয়ে বারবার গুলিয়ে ফেললেন। লাইন, শব্দ সব যেন কেমন জড়িয়ে জড়িয়ে গেল। পরে শুনলে নিজেও হয়তো ভাববেন, কেন না দেখে গাইতে গেলেন। লিরিক দেখে গাইলেই সমস্যা মিটে যেত!
এখানেই শেষ নয়। এর পর বাবুল মাঝের স্তবক বাদ দিয়ে চলে গেলেন, “বাংলা আমার তৃষ্ণার জল দৃপ্ত শেষ চুমুক”-এ। তার আগে যা ছিল সব যেন বাবুলের স্মৃতি থেকে উবে গিয়েছিল। “আমি যা কিছু মহান বরণ করেছি বিনম্র শ্রদ্ধায়/ মেশে তেরো নদী, সাত সাগরের জল, গঙ্গায়-পদ্মায়”—এসব লাইনই গাইলেন না বাবুল। দুম করে চলে গেলেন অন্য স্তবকে।
অনেকের মতে, বহু গায়কই মাঝে মাঝে লাইন, শব্দ ভুল গেয়ে ফেলেন। আবার তা শুধরেও নেন। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য, এদিন বাবুলকে দেখে মনে হয়েছে, তাঁর কোনও প্রস্তুতিই ছিল না। যেন তিনি এসেছেন আর ধরে মঞ্চে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বাবুল এমনিতে টিপ্পনিতে পটু। বিজেপিতে যখন ছিলেন তখন নিয়ম করে মমতা, অভিষেকদের বিরুদ্ধে চোখা চোখা বিদ্রুপ ছুড়ে দিতেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার পর দিলীপ ঘোষের পোস্ট নিয়েও খুঁত ধরে ঠাট্টা করেছিলেন আসানসোলের সাংসদ। কিন্তু এদিন সেই বাবুলই যেন ঘেঁটে গেলেন।