আশ্বিনের শারদ-সন্ধ্যায় ‘দিল্লি চলো’ এর ডাক দিলেন মমতা
কোভিড, আর্থিক অধোগতির মধ্যেই দেবীপক্ষের শুরুতে উৎসবের আমেজ লেগেছে বাংলার গায়ে। আর আশ্বিনের শারদ সন্ধ্যায় গেল, দিল্লির ডাক দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী (TMC) তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
শারদ জাগোবাংলায় প্রথম প্রবন্ধটিই মমতার লেখা। তার শিরোনাম দিল্লির ডাক। সেখানে দিদি বিস্তারিত লিখেছেন, এটা সমতের দাবি। দেশ বাঁচানোই এখন চ্যালেঞ্জ। বিজেপিকে উৎখাত করতে তৃণমূলই যে লড়াইয়ের মুখ হয়ে উঠেছে তা ছত্রেছত্রে লিখেছেন দিদি।
মমতার গোটা প্রবন্ধের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বাংলায় সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই ও রেলমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কাজ। অটলবিহারী বাজপেয়ী ও দ্বিতীয় মনমোহন সিং সরকারের সময়ে রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়ে যে কাজগুলি করেছিলেন সেগুলি রেল ব্যবস্থাতে আমূল বদল এনে দিয়েছে বলে এই লেখায় দাবি করেছেন তৃণমূলনেত্রী। সেইসঙ্গে তিনি এও স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন, তিনি পদের জন্য লালায়িত নন। জীবনে তিনি অনেক পদ পেয়েছেন আবার এক লহমায় তা ছেড়েও দিয়েছেন। তাঁর জীবনের এক ও একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা।
কংগ্রেস সম্পর্কেও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তিনি বা তাঁর দল বিরোধী মঞ্চের কথা ভাবছে না। তবে কংগ্রেস যে বিজেপিকে ঠেকাতে পারছে না তা প্রমাণিত সত্য। গত দু’টি লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির কথা লিখেছেন মমতা।
বিশেষ প্রবন্ধে তৃণমূলনেত্রী লিখেছেন, “বিজেপি বিরোধী সব দলের উচিত একজোট হওয়া। নিজেদের অঙ্কে নয়, দেশের স্বার্থে একজোট হতে হবে। বিকল্প মঞ্চ শক্তিশালী করতে হবে। সেই মঞ্চ হবে নীতির ভিত্তিতে, কর্মসূচির ভিত্তিতে। আমরা কখনই কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মঞ্চের কথা ভাবছি না, বলছি না।”
সেইসঙ্গে দিদি এও লিখেছেন, “কিন্তু বাস্তব হল সাম্প্রতিক অতীতে কংগ্রেস দিল্লির দরবারে বিজেপিকে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে। গত দুটি লোকসভা নির্বাচন তার বড় প্রমাণ।”
অনেকের মতে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী মঞ্চ হবে না বললেও প্রচ্ছন্ন খোঁচা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বোঝাতে চেয়েছেন, বাংলায় সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস আপস করত। তাই তিনি দল ছেড়ে বেরিয়ে এসে নতুন দল গড়েছিলেন। সিপিএম বিরোধী লড়াইয়ে যেমন মুখ হয়ে উঠেছিল তৃণমূল, তেমন একুশের ভোটে বাংলায় সর্বশক্তি ঢেলে দেওয়া বিজেপিকে রুখে দেওয়া তৃণমূলই এখন দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে মূল শক্তি।