রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বরাদ্দ ইলিশের ২৫ শতাংশও আসেনি বাংলাদেশ থেকে, মনখারাপ এপার বাংলার

October 6, 2021 | 2 min read

দেখনসই চেহারার বাংলাদেশি ইলিশ সীমানা পেরিয়ে বাংলায় এল বটে। কিন্তু বাঙালির মন ভরল কি? ইলিশের জন্য যতটা লোভ দেখিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার, তার চারভাগের একভাগও এল না এপার বাংলায়। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে সরকারি নির্দেশের হেরফের না হলে, আর আসবেও না এবছর। মাছ ব্যবসায়ীরা তো বটেই, মন খারাপ ইলিশ-প্রেমীদেরও।

পুজোর মুখে ভারত তথা বাংলাকে ইলিশ ‘উপহার’ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু উপহারের ‘চাপ’ এতটাই বেশি ছিল, তা নিয়ে রীতিমতো টেনশন শুরু হয়। মাছ আমদানিকারী সংস্থাগুলির আশঙ্কা ছিল, যে পরিমাণ ইলিশ যে সময়ের মধ্যে এদেশে আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাতে সব মাছ আসতে পারবে না। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল এবার। প্রথম ধাপে বাংলাদেশ সরকার এদেশে ২ হাজার ৮০ টন ইলিশ আসার অনুমতি দিয়েছিল। তা প্রায় গতবারের সমান। তার জন্য সময়সীমা রাখা হয়েছিল ১০ অক্টোবর। মোট ৫২টি সংস্থাকে তার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ফের বাংলাদেশ সরকার জানায়, এদেশে আরও ৬৩টি সংস্থা ইলিশ আমদানি করতে পারবে। আরও ২ হাজার ৫২০ টন ইলিশ আনতে পারবে ওই সংস্থাগুলি। তবে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ৩ অক্টোবর। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানানো হলেও, তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, যেখানে ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে আমদানি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৮০ টন। অর্থাৎ এক চতুর্থাংশের থেকেও কম। নতুন করে আর সময়সীমা বাড়ায়নি বাংলাদেশ সরকার।

কেন অনুমোদন পাওয়া পুরো ইলিশ আনা গেল না? ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, সীমান্তে পণ্য আমদানির যে পরিকাঠামো আছে, তাতে এত অল্প সময়ে সব ইলিশ নিয়ে ট্রাক আসতে পারবে না। তাই যে-ক’টি ট্রাক আসতে পেরেছে, সেই অনুপাতে মাছ এসেছে। শুধু ইলিশ এলে হয়তো এরচেয়ে বেশি ইলিশ আনা সম্ভব হতো। কিন্তু অন্যান্য পণ্যও আসছে সীমানা পেরিয়ে। তার প্রশাসনিক কাজকর্মে সময় লেগেছে। ইলিশ আমদানির সময় সীমান্তে ট্রাকের লম্বা লাইন শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাতে সঙ্কট মারাত্মক আকার নিয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার সময়সীমা বাড়ালে সমস্যা হতো না বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এবার এমনিতেই টান ছিল দেশীয় ইলিশের জোগানে। ফলে দীঘা, কাকদ্বীপ বা ডায়মন্ডহারবারের ইলিশের ঝালে-ঝোলে-অম্বলে খাওয়া হয়নি প্রায় কারও। যেটুকু ইলিশ বাজারে মিলেছে, দামের ভারে তাতে হাত দিতে পারেনি সাধারণ মানুষ। খোকা ইলিশ কিছু ছিল বটে, কিন্তু দামে তাও কিছু কম ছিল না। তার স্বাদও মন ভরায়নি কারও। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ‘উপহার’ ফের বাঙালির জিভে জল এনেছিল। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতা জল ঢেলে দিল। আসছে বছর আবার হয় কি না, এখন তারই প্রতীক্ষা ইলিশপ্রেমী বাঙালি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Bangladesh, #Ilish

আরো দেখুন