পুজোর আগে পঞ্চায়েত দপ্তরের সৃষ্টিশ্রী বিপণন কেন্দ্রের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সৃষ্টিশ্রী বিপণন কেন্দ্রের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের তৈরি হরেক সামগ্রী কিনতে এখানে উপচে পড়ছে ভিড়। করোনার কারণে বাজার এখন মন্দা। কিন্তু গত দেড় বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রায় ১.৫ কোটি টাকার বিক্রিবাটা হয়েছে সৃষ্টিশ্রী বিপণন কেন্দ্রে। বছরের শেষে এই হিসেব ২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী আধিকারিকরা। পুজোর বাজারে কেনাবেচায় ভালো সাড়া পেয়ে উৎসব সেলের দিনক্ষণ ৬ থেকে বাড়িয়ে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকুরিয়ায় শপিং মলের আদলে এই বিপণন কেন্দ্র্রের উদ্বোধন হয়। জেলায় জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দ্বারা তৈরি সামগ্রী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা চালু হওয়ার তিন মাসের মধ্যে করোনা সংক্রমণের কারণে লকডাউন ঘোষণা হয়ে যায়। আড়াই-তিন মাস পর ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করলে ফের খুলে দেওয়া হয় এই বিপণন কেন্দ্র। সেই বছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কয়েকদিন কেনাকাটার উপর আকর্ষণীয় ছাড় ঘোষণা করা হয়েছিল। তাতে নজরকাড়া সাফল্য আসে। দপ্তরের হিসেব বলছে, ওই তিন-চারদিনে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার কেনাবেচা হয়েছিল। সব মিলিয়ে ওই বছর প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছে বলে জানা যায়।
চলতি বছরও নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়। করোনা সামলাতে দু’মাসের বেশি সময় কঠোর অনুশাসন জারি করেছিল সরকার। কিন্তু ফের সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর বোঝা যায়, সৃষ্টিশ্রী বিপণন কেন্দ্রের আকর্ষণ একটুও কমেনি। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে পুজোর সেল শুরু হয়েছে এখানে। এই পর্যায়ে এখনও পর্যন্ত ৯ লক্ষ টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছে। সব মিলিয়ে বিক্রির পরিমাণ ৬০ লক্ষ ছুঁয়েছে।
এখানে ক্রেতাদের মধ্যে শাড়ির চাহিদা বেশ ভালো বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বিশেষ করে নদীয়া জেলার নামাঙ্কিত স্টল থেকে শাড়ি কিনতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদের নামাঙ্কিত স্টলে বিক্রির পরিমাণ ভালোই। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাও পিছিয়ে নেই। বীরভূম জেলার দু’টি স্টল থেকেও ভালোই আয় হয়েছে। যেমন ২ অক্টোবর শুধু বীরভূম স্টল থেকে ২৬ হাজার টাকারও কিছু বেশি বিক্রিবাটা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্টল থেকেই প্রায় ২৯ হাজার টাকা কেনাবেচা হয়েছে সেদিন। ওই দিন নদীয়া জেলার স্টল থেকে ২৩ হাজার ৭০০ টাকার বিক্রি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীণ জীবিকা মিশনের (ডব্লুবিএসআরএলএম) সিইও স্মিতা পাণ্ডে বলেন, গ্রামীণ বাংলার স্বাদ ও রুচির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য সৃষ্টিশ্রী হল আদর্শ জায়গা। কারণ এই পণ্যগুলি প্রচুর ভালবাসা, বিশুদ্ধতা এবং সরলতা দিয়ে তৈরি। আমরা ‘হোমমেড’ অনুভূতির পাশাপাশি যুক্তিগ্রাহ্য মূল্যে গ্রামবাংলার তৈরি পণ্য সরবরাহ করতে চাই।