উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে শিশুমৃত্যু নিয়ন্ত্রণে
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর হার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এল। গত ২৪ ঘণ্টায় একজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বাগডোগরায় দু’দিন বয়সের এই শিশুটি কম ওজন নিয়ে জন্মেছিল। শুক্রবার শিশুটি সেপটিসেমিয়ায় মারা গিয়েছে বলে জানান হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক। বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনে (এআরআই) কোনও শিশু মারা যায়নি। তাছাড়া শিশুমৃত্যুর হার কমে আসার পাশাপাশি রোগী ভর্তির সংখ্যাও অনেকটা কমে এসেছে। ভর্তির তুলনায় সুস্থ হয়ে ওঠা শিশুর সংখ্যা এখন বেশি। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ৩০ জন নতুন করে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে চারজন এআরআই সংক্রামিত। এদের মধ্যে মালবাজার, ইসলামপুর ও শিলিগুড়ি থেকে একজন করে মোট তিনজন শিশু রেফার হয়ে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে মোট ৩৫ জন শিশু। এদের মধ্যে তিনজন এআরআই আক্রান্ত রয়েছে। এদিন হাসপাতাল সুপার জানান, এআরআই সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে বলা না গেলেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। কারণ, গত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গা থেকে রেফার হয়ে আসা শিশুদের মধ্যে এআরআই সংক্রামিতের সংখ্যা সন্তোষজনকভাবে কমেছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুরাও দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। ফলে গত মাসের গোড়াতে জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়া এবং কয়েকজন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেই উদ্বেগ অনেকটাই কেটে গিয়েছে। যদিও পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে গা ছাড়াভাব দেখালে চলবে না। সুপার বলেন, এই সময়ে শিশুদের কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে দ্রুত যেতে হবে। শিশুদের যথেষ্ট সাবধানে রাখতে হবে। জ্বরে আক্রান্ত কোনও শিশু বা ব্যক্তির সংস্পর্শে যাতে সুস্থ শিশুরা না যায়, তা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
এআরআই আক্রান্ত শিশু মৃত্যুর সংখ্যা কমে গেলেও সাধারণ অসুখে শিশুমৃত্যুর ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কম ওজনের সদ্যোজাতদেরই মৃত্যু হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার বলেন, আধুনিক জীবনযাত্রায় খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। শিশুদের পাশাপাশি বড়দের মধ্যে মুড়ি, চিড়ে সহ ঘরোয়া খাবার খাওয়ার প্রবণতা উঠে গিয়েছে বললেই চলে। এই খাবারগুলি থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টি সহ অন্যান্য খাদ্যগুণ পাওয়া যেত। এখন সেই জায়গায় একটা বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের উপর এর বেশি প্রভাব পড়ছে।