লখিমপুর কাণ্ডে জড়িত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা আজও ঝুলে
তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। লখিমপুর খেরির সাংসদও। এলাকায় তাঁর প্রভাব এবং প্রতাপ সন্দেহাতীত। লখিমপুর কাণ্ডের পরদিনই মন্ত্রী অজয় মিশ্র সদর্পে দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। কৃষক হত্যার বিতর্ক ঢাকতে এভাবেই নিজের ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’ প্রমাণের চেষ্টা করেন মন্ত্রীমশাই। কিন্তু সরকারি রেকর্ড অন্য কথা বলছে। একটি খুনের মামলায় নিম্ন আদালতে বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন মিশ্র। কিন্তু সেই রায়ের রিভিউ পিটিশন বিচারাধীন এলাহাবাদ হাইকোর্টে। খুনের সেই মামলায় অজয় মিশ্রের বিরুদ্ধে পিটিশন পেশ করা পরিবারের সদস্যদের দাবি, এখন আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে তাঁদের।
২০০০ সালের ৮ জুলাই। কেনাকাটা করতে বেরিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় প্রভাত গুপ্ত নামে এক ব্যক্তির। সেই খুনের মামলাতেই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল অজয় মিশ্র সহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে। প্রভাতের পরিবারের দাবি ছিল, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণেই এই খুন। কিন্তু ২০০৪ সালে নিম্ন আদালত বেকসুর খালাস করে মিশ্র সহ চার অভিযুক্তকেই। তৎকালীন রাজ্য সরকার এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যায়। নিহত প্রভাত গুপ্তর পরিবারও রিভিউ পিটিশন দায়ের করে। প্রভাতের ভাই রাজীব গুপ্ত বলেন, অজয় মিশ্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই আমরা বাড়তি সতর্কতা নিয়ে চলছি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ এই আবেদনের শুনানি শুরু হয়। হাইকোর্টের ওয়েবসাইট বলছে, ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শেষবার মামলাটির শুনানি হয়। নিহতের ভাই রাজীব গুপ্ত বলেন, রিভিউ পিটিশন করার পর থেকেই অজয় মিশ্রের লোকেরা আমাদের উপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। চাপ তৈরি করতে আমার বিরুদ্ধে চারটি ভুয়ো মামলা দায়ের করেছিল। চারটি মামলাতেই আদালত আমাকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। এবিষয়ে অজয় মিশ্রের প্রতিক্রিয়া না মিললেও তাঁর আইনজীবীরা অভিযোগ খারিজ করে দেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, আদালতে যাওয়ার সময় অজয় মিশ্রকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল প্রভাত ও রাজীবের আরেক ভাই সঞ্জীব গুপ্ত। রাজীব গুপ্ত অভিযোগের সত্যতা মেনে নিয়ে বলেন, দাদাকে ওরা গুলি করে মারার পর এই ঘটনা ঘটেছিল। আমার ভাই সঞ্জীব এখন জামিনে মুক্ত। কিন্তু এটাও সত্যি, অজয় মিশ্র আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা করেছে। আমাদের হেনস্তা করছে। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে কাটছে আমাদের।