রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বিজেপির পুজোর বাজেট ২ কোটি থেকে এক ধাক্কায় কমে ১০ লক্ষ

October 10, 2021 | 2 min read

 বিজেপির গতবছরের পুজোর প্রতিমা। – ফাইল চিত্র

ভোট বাজারে বাংলা আর বাঙালির মন জয়ে গত বছর দশভুজার আয়োজনে কোনও খামতি রাখেনি তারা। সেবার প্রথম বছরের আয়োজনেই পুজোর বাজেট ছিল ২ কোটি টাকা। কিন্তু আব কী বার, স্বপ্ন ছারখার—বঙ্গজয়ের বিফল মনোরথে সে বাজেট কাটছাঁট হয়ে এবার নেমে এসেছে ১০ লাখ টাকায়। এই দশা করোনার জেরে সাবেক কোনও বারোয়ারি পুজো কমিটির নয়। বাংলায় ভোটে হেরে কার্যত জৌলুস হারাতে বসেছে বিজেপির দুর্গা পুজো। মোদি-শাহের বাংলা দখলের স্বপ্ন ভঙ্গের পর থেকে এবার পার্টির তরফে দুর্গা পুজো আয়োজন ঘিরেই সংশয় তৈরি হয়েছিল। কারণ, গতবার মূল আয়োজক যাঁরা ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ ভোট পরবর্তী সময়ে বাংলামুখী হননি। আর কয়েকজন বিজেপি পার্টি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কার্যত নমঃ নমঃ করে এবার দুর্গা পুজো সারছে গেরুয়া পার্টি। ধারে-ভারে তা গতবারের তুলনায় রীতিমতো তুচ্ছ। একই সঙ্গে পার্টির অন্দরেই এই পুজো নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের স্পষ্ট অবস্থান, দুর্গা পুজো করা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার সভাপতির চেয়ারে বসে সেই দুর্গা পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

দলীয় সূত্রের দাবি, গতবারের মতো এবারও সল্টলেকের ইজেডসিসিতে বিজেপির পুজো আয়োজন করা হবে। মহাষষ্ঠীর দিন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা ভার্চুয়ালি পুজো উদ্বোধন করবেন। এবারের বাজেট ১০ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে ৫ লাখ টাকা রাজ্য পার্টির ফান্ড থেকে জোগানো হবে। বাকি টাকা দলীয় বিধায়ক, সাংসদ, নেতা, কর্মীদের থেকে চাঁদা হিসেবে তোলা হবে। জানা গিয়েছে, ইজেডসিসি’র ভাড়া হিসেবেই ৫ লাখ টাকা খরচ হবে। ২ লাখ টাকার প্যান্ডেল ও মণ্ডপ সজ্জার জন্য ধরা হয়েছে। হাজার পঞ্চাশেক টাকার প্রতিমা। বাকি টাকায় পুজোর সামগ্রী সহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় হিসেবে ধরা হয়েছে। সবমিলিয়ে কোনও রকমে পুজো সারার পথে হাঁটছে পদ্ম পার্টি। এ প্রসঙ্গে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, কিছুদিন আগে পর্যন্ত ঠিক ছিল পুজো হবে না। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পুজো আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী একবার পুজো করলে অন্তত তিনবার তা করতেই হয়। তাঁর সাফ কথা, গতবার পুজো করাটাই ভুল ছিল। এবার তা বন্ধ করে দিলে আরও বড় ভুল হতো। হিন্দুত্বের বড়াই করা পার্টি এহেন আচরণ সাধারণ ভালো ভাবে মেনে নেয়নি বলেও মনে করেন তিনি। উল্লেখ্য, গতবার কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত ছিলেন পুজোর মূল হোতা। প্রথমজন ভোটের পর থেকে বাংলার মাটিতে পা রাখেননি। শেষ দুজন সিঙ্গল ফুল ছেড়ে ফের জোড়া ফুলে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি গতবছর ষষ্ঠীর দিন ভার্চুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি পুজোর দিনগুলিতে ছিল এলাহি খানাপিনার আয়োজন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী ডোনা পুজো সূচনার দিনে নৃত্য পরিবেশন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাংলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। ২০০ আসনের প্রত্যাশার বেলুন ফেটে যাওয়ায় এবার কোনও খাবার দাবারের আয়োজন হচ্ছে না। নাচা-গানার কথা কল্পনাতেও আনছেন না বিজেপি নেতারা। যে ফুল ছাড়া মায়ের আরাধনা অপূর্ণ থেকে যায়, সেই ‘পদ্ম’ প্রতীকধারী রাজনৈতিক দলটিকে উৎসব পর্বে এবার সত্যিই ম্লান দেখাচ্ছে

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga pujo 2021, #bjp

আরো দেখুন