আইনি নোটিসের কাছে নতিস্বীকার করছে না সাফ জানিয়ে দিল দমদম পার্ক ভারতচক্র
ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে আনা দেশজোড়া কৃষক আন্দোলন থিম। মণ্ডপসজ্জায় জুতো, চটি। প্রতিবাদের জ্বলন্ত ছবি ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে যথাযথভাবে এসবই ব্যবহার করে মণ্ডপ সাজিয়ে তুলেছে দমদম পার্ক ভারতচক্র (Dum Dum Park Bharat Chakra)। আর পুজোর মরশুমে এই মণ্ডপটিই চর্চার শীর্ষে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যতই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ তুলে শোরগোল হোক, পুজো উদ্যোক্তারা এ নিয়ে মাথা ঘামাতে একেবারেই নারাজ। এখানকার থিমশিল্পী অনির্বাণ দাস বলছেন, ”আমরা মণ্ডপসজ্জ থেকে জুতো, চটি সরিয়ে নিয়েছি বলে অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, আমরা নতিস্বীকার করেছি। কিন্তু তা ঠিক নয়। নতিস্বীকারের কী আছে? মায়ের পুজো করছি, নতিস্বীকার করব না।”
তেভাগা, তেলেঙ্গানা আধিয়ার থেকে শুরু করে ফকির বা সন্ন্যাসী আন্দোলন। কুকা থেকে তিতুমিরের বারাসত। ভবানীপাঠক হোন বা দেবী চৌধুরানি, অহল্যাদেবী থেকে ইরাদেবী, সবশেষে লখিমপুর খেরি – শাসকের বিরুদ্ধে ঝড় তোলা সব নাম নিয়ে পুজো মণ্ডপ সেজেছে তিলোত্তমায়, এমনটা বিশেষ কানে আসেনি। তবে এবছর এসব লড়াইয়ের কথাকাহিনি উঠে এসেছে ভারতচক্রের দুর্গাপুজোর (Durga Puja) থিমে।
দেবী দুর্গার মণ্ডপে এই সজ্জা জনমানসের ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত’, এই অভিযোগ জানিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। আপত্তি তুলেছে বিজেপিও। শনিবারই এই নোটিস হাতে এসেছে পুজো কমিটির। যদিও এই আইনি চিঠিকে আমল দিতে নারাজ উদ্যোক্তারা। তাঁরা আপাতত সুষ্ঠুভাবে পুজো সম্পন্ন করার দিকেই মনোনিবেশ করছেন।
তারপরও অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্টে দাবি করা হয়েছে, চাপের কাছে ‘নতিস্বীকার’ করে ভারতচক্র নাকি মণ্ডপসজ্জা থেকে জুতো, চটি সরানো হয়েছে। এ নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’ যোগাযোগ করেছিল থিমশিল্পী অনির্বাণ দাসের সঙ্গে। তিনি বলছেন, ”মায়ের মূর্তি যেখানে আছে, সেখানে মোটেই জুতো নেই। আর থিমের সঙ্গে জুতো, চটি – এসব আনুষঙ্গিক। তাই মণ্ডপ সাজাতে তা একটি অংশে ব্যবহার করা হয়েছে।”
শিল্পীর আরও বক্তব্য, ”এ বছর আরও দুটো পুজো মণ্ডপও জুতো দিয়ে সাজানো হয়েছে। সমাজসেবী আর শিবমন্দির। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে কেন তা ইনস্টল করা যাবে না? দেখুন, মন্দিরের বাইরে মানুষ জুতো খুলে প্রবেশ করেন। তার বাইরেও জুতোর স্ট্যান্ড থাকে। সেটাই সাধারণ ব্যাপার। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। আলোচনার জন্য জুতো সরিয়ে ফেলার কোনও সিদ্ধান্ত আমরা নিচ্ছি না।”