শেষ লগ্নে এসে জমজমাট পুজোর বাজার, খুশি বিক্রেতারা
দুপুরের পর থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখার হিড়িক। একদলের মধ্যে যখন ঠাকুর দেখা ব্যস্ততা, তখন অনেকেরই আবার শেষ মুহূর্তের জামা-কাপড়, অলঙ্কার ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার তাড়া। খাতায় কলমে মহাপঞ্চমী হলেও পুজোর আগের শেষ রবিবারে উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই কেনাকাটার ভিড় নেহাৎ কম ছিল না। শেষ লগ্নে এসে কেনাকাটার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর দিনের শেষে হাসি ফুটেছে ক্রেতা-বিক্রেতা দু’পক্ষের মুখেই। কলকাতার তিন এলাকার বাজার জুড়ে ধরা দিয়েছে উৎসবের আনন্দ। তবে চিন্তা বাড়িয়েছে মাস্কহীনদের অসচেতনতা। প্রচার, সতর্কতাবাণী সত্ত্বেও প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষের মুখে যথাযথভাবে মাস্ক দেখা যায়নি। বরং ডবল ডোজ ভ্যাকসিন হয়ে যাওয়ায় মাস্কের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট চত্বর ঘুরে দেখা গিয়েছে, প্রায় ভিড়ে ঠাসা দু’ধারের ফুটপাত। ক্রেতারা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই আকাশের মুখ ভার করে আসায় ও অফিসের ছুটি না থাকায় অনেকেই আগেভাগে কেনাকাটা করতে পারেননি। তাই রবিবারে সকাল থেকেই বেরিয়ে পড়েন শহরবাসী। সঙ্গীতা সেন ও সুস্মিতা সেন, মা ও মেয়ে মিলে এদিন বাড়ির ছোটদের জন্য জামাকাপড় কিনতে আসেন। সুস্মিতা জানিয়েছেন, আইটি কর্মী হওয়ার সুবাদে রবিবারেও অনেকসময় ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে হয়েছে। তবে এদিন যে কোনওভাবেই পুজো শপিংয়ের জন্য বেরব, সেটা ঠিক করেই রেখেছিলাম। সেই মতো মাকে সঙ্গে নিয়ে যাদবপুর থেকে গড়িয়াহাটে কেনাকাটা সারতে চলে এসেছেন তিনি। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ক্রেতাদের বিপুল ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরাও। সমীর রায় নামে এক বিক্রেতার বক্তব্য, করোনার জন্য মানুষ এখন আর হাত খুলে খরচা করেন না। পুজোর বাজারের দিকেই আমরা সারা বছর ধরে তাকিয়ে ছিলাম। কোভিডপূর্ব কালের মতো না হলেও লাভের পরিমাণে মোটামুটি খুশি গড়িয়াহাটের ব্যবসায়ীমহল।
অন্যদিকে, হাতিবাগান চত্বরে এদিন সন্ধ্যায় তিল ধারণের জায়গা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেখানে কেনাকাটায় পুরুষদের পাঞ্জাবি কেনার ধূম চোখে পড়েছে। হাতিবাগান থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত একাধিক পাঞ্জাবির দোকানে বেশ ভিড় দেখা গিয়েছে। পছন্দসই রঙের পোশাক দেখেশুনে কেনার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে পুজোর আমেজকে। তবে শেষবেলার ঝটিতি ব্যবসায় ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটেছে রতন সাউ, নীলাঞ্জন প্রামাণিকদের। হাতিবাগানে অত্যধিক ভিড় সামলাতে এদিন রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিসকে। একইসঙ্গে, নিউমার্কেট চত্বরে প্রায় জনপ্লাবন নামে রবিবারের সন্ধ্যায়। চরম অসচেতনতায় চলেছে কেনাকাটি। মাস্কের কোনও বালাই নেই। হগ মার্কেটের সামনে পুলিসের বুথ থেকে মাস্ক পরার কথা প্রচার করা হলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করেননি অধিকাংশ।