আলু ভাজার দাম ৯০ টাকা! পুজো স্পেশাল মেনু নিয়ে বিতর্কে ‘ভূতের রাজা দিল বর’
আলু ভাজা বা বেগুন ভাজার দাম ৯০ টাকা! এক পিস পোস্তর বড়া বিকোচ্ছে ২২০ টাকায়! এক টুকরো ইলিশের দাম ৫২৫! দেখেই আঁতকে উঠেছিল ভোজনরসিক বাঙালি। আর এরপরেই শুরু তুলোধনা। ব্যাপারটা কী? এটাই ভাবছেন তো? তাহলে একটু পরিষ্কার করে বলা যাক। উৎসবের মরশুমে পুজো স্পেশাল মেনু নিয়ে তৈরি কলকাতার প্রতিটি রেস্তোরাঁ। কোন রেস্তোরাঁর মেনুতে কী থাকছে, তার ঝলক দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সম্প্রতি নিজেদের পুজো মেনু প্রকাশ্যে এনেছে ‘ভূতের রাজা দিল বর’ নামের একটি বাঙালি রেস্তোরাঁ। সেই মেনু কার্ডে উঁকি দিতেই দেখা গিয়েছে ওই দাম। যা দেখে মধ্যবিত্তের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে।
আসলে পুজোর দিনে রেস্তোরাঁয় গিয়ে চিতল মাছের মুইঠ্যা বা কচুপাতা ভাপা চিংড়ি খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। এসব পদ এখন আর সেভাবে বাঙালির হেঁসেলে দেখা যায় না। অগত্যা রসনা তৃপ্ত করতে রেস্তোরাঁই ভরসা। যাঁরা বাইরে বেরোতে নারাজ, তাঁরা সুইগি বা জোমাটোয় উঁকি দিয়ে এই ধরনের পদ অর্ডার করে থাকেন। কিন্তু, এক পিস পমফ্রেট মাছের জন্য কড়কড়ে ৩০০ টাকা খরচ করতে নারাজ বেশিরভাগই। এক নেটিজেন লিখলেন, ‘আলুভাজা ৯০ টাকা? এ তো দিনেদুপুরে ডাকাতি মশাই!’ আরেকজনের বক্তব্য, ‘পদ্মাপাড়ের ইলিশ ভাপাটা আবার কী? আপনারা কি পদ্মাপাড়ে বসে থাকেন ওই মাছ ধরার জন্য?’
পুজোর বিশেষ মেনুর ট্যাগলাইন হিসেবে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ ট্যাগলাইনও তৈরি করেছে। ‘প্রতি পদে মাতৃত্বের ছোঁয়া।’ সেই লাইনটিকেও ক্যারিকেচার করে হাসির রোল উঠেছিল নেটপাড়ায়। যেমন, একজন লিখলেন, ‘মাতৃত্বের ছোঁয়া? ৯০ টাকার আলু ভাজা খেলে মা আমাক কিলিয়ে কাঁঠাল করে দেবে!’ আরেকজন লিখলেন, ‘প্রতিপদে মাতৃত্ব নয়, ডাকাতির ছোঁয়া।’
অনেকে আবার বেজায় চটে গিয়েছিলেন এহেন দাম দেখে। রাগত ভাবেই একজন লিখেছেন, ‘বিশেষ দ্রষ্টব্য হিসেবে লিখে দিন যে ওগুলো শুধুমাত্র আদানি, আম্বানিদের জন্য। বাজারে এক কেজি ভালো সাইজের চিতল মাছ পাওয়া যায় ৬০০ টাকায়। এক পিস কে খাবে মশাই?’ আরেকজনের দাবি, ‘আলু আর বেগুনভাজা ৯০ টাকা? আমরা তো ৯০ টাকায় এক প্লেট বিরিয়ানি খাই। একটু ভাবনা চিন্তা করে দামগুলো ফেলতে পারেন তো!’ অপর নেটিজনের টিপ্পনি, ‘৯০ টাকায় পাঁচ কেজি চন্দ্রমুখী আলু পাওয়া যায় দাদা। এক প্লেট আলু ভেজে বিক্রি করতে ওই দামে! ভাবা যায়!’
মোদ্দা কথা, ছুটির দিনে রসনা নিয়ে রসিকতা এবং রাগারাগি দুই-ই চলছে নেটপাড়ায়। তুমুল হইচইয়ের জেরে ভাইরাল ‘ভূতের রাজা’। ভোজনরসিক টেনিদা থাকলে হয়ত ‘মেফিস্টোফিলিস ইয়াক ইয়াক’ গোছের মন্তব্য করেই ফেলতেন। তবে বাঙালিও কম যায় না। ৭০ টাকায় দু’ পিস রসগোল্লা বিকোচ্ছে দেখে একজন লিখলেন, ‘বাঘা বেঁচে থাকলে তার ঢোল আপনাদের মাথায় ভাঙতো!’ অর্থাৎ নরমে গরমে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের তুলোধনা চলেছে এদিন।