দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

কাশীর মত এবার নবদ্বীপেও চালু হচ্ছে গঙ্গা আরতি

October 18, 2021 | 2 min read

কাশী বা হরিদ্বারের মতো এবার চৈতন্যভূমিতে শুরু হয়েছে নবরূপে গঙ্গা আরতি। বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গৌরগঙ্গা আরতি কমিটির সদস্যরা। শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন মঠ মন্দিরের অধ্যক্ষ, বৈষ্ণব, সাধুসন্ত ও অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতিতে স্থানীয় রানিরঘাটে নবরূপে এই গঙ্গা আরতি শুরু হয়।

এদিন গঙ্গা আরতি শুরুর আগে পবিত্র মঙ্গলাচারণ পাঠ করে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সূর্য্যদেব গোস্বামী। এরপর গঙ্গার ঘাটের গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দিরের সামনে কীর্তন পরিবেশন করে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র দেবরাজ গোস্বামী। নবদ্বীপের বিভিন্ন মঠ মন্দিরের অধ্যক্ষ বৈষ্ণবরা দীর্ঘ সময় ধরে খোল করতাল কাঁসর ঘণ্টা সহকারে গঙ্গা আরতি করেন। এদিন এই আরতি দেখতে অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

গৌরগঙ্গা আরতি কমিটির সভাপতি সুদিন গোস্বামী বলেন, এলাহাবাদ, হরিদ্বার, প্রয়াগে প্রতিদিন যেভাবে গঙ্গা আরতি করা হয়, ঠিক সেই ভাবেই বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপের রানিরঘাটে এই গঙ্গা আরতি করা হবে। নিয়ম সেবার মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ একাদশীর দিন থেকেই এই গঙ্গা আরতি শুরু করা হল। সারা বছরই চলবে এই আরতি।

গৌরগঙ্গা আরতি কমিটির সম্পাদক তথা গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের মহা সচিব কিশোর গোস্বামী বলেন, গৌরগঙ্গা আরতি কমিটির পক্ষ থেকে এর আগেও এখানে অনাড়ম্বরভাবে গঙ্গা আরতি করা হতো। শ্রীচৈতন্যের জন্মস্থান এই পুণ্যভূমিতে নিয়মিত যাতে গঙ্গা আরতি হয় সে কারণে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজ এগিয়ে এসেছে। আমরা চাই এই পবিত্র গঙ্গা, যে গঙ্গায় মহাপ্রভু প্রতিদিন তিনবার অবগাহন করতেন, সেই পবিত্র গঙ্গাকে গঙ্গা আরতির মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো। সে কারণে নিষ্ঠার সঙ্গে এই গঙ্গা আরতি বজায় থাকে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাবে কমিটির সদস্যরা। তিনি বলেন, আগামী দিনও যাতে এই গঙ্গা আরতির টানে নবদ্বীপে ছুটে আসেন মানুষ সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।পণ্ডিত প্রবর ডঃ কুমারনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ব্রাহ্মণরা প্রতিদিন যে সন্ধ্যা আহ্নিক করেন, সেই সন্ধা আহ্নিকের ক্ষেত্রে গঙ্গাকে আহ্বান করার একটা বিশেষ বিধি আছে। সেজন্য মা গঙ্গার স্তব ছাড়া ব্রাহ্মণদের সন্ধ্যা আহ্নিক হয় না। এ বিষয় নিয়ে গঙ্গার মাহাত্ম্য ব্যাখ্যা করেন তিনি। নবদ্বীপ পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্মস্থান এই শহর। এখানে নবরূপে গঙ্গা আরতির যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা যাতে হরিদ্বারের থেকেও
এখানে ভালো ভাবে করা যায়, তার জন্য সবরকম সহযোগিতা করবে পুরসভা। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে শ্রীচৈতন্যের এই শহরকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরিটেজ ঘোষণা করেছেন। সে কারণে রানিরঘাট সহ ১১টি স্নানের ঘাটকে ঢেলে সাজিয়ে তোলা হবে। রানিরঘাট যেহেতু রানি রাসমণির নামাঙ্কিত ঘাট, সে কারণে এখানে তাঁর একটি সুন্দর আবক্ষ মূর্তির বসানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ভাবে এই ঘাটটিকে সাজিয়ে তোলা হবে।এদিন কমিটির পক্ষ থেকে গঙ্গামাতাকে দূষণমুক্ত ও তার পবিত্রতা রক্ষা করতে, পুজোর সামগ্রী গঙ্গাবক্ষে নিক্ষেপ না করার জন্যও আবেদন জানানো হয়। এদিন এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গৌরগঙ্গা আরতি কমিটির কার্যকরী সভাপতি প্রেমগোপাল গোস্বামী। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Nabadwip, #Ganga Aarti

আরো দেখুন