গত চার মাসে কন্যাশ্রী প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রার ৯০শতাংশ পূরণ বাংলায়, খুশি ছাত্রীরা
করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ স্কুল। পঠনপাঠন এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি। পাশাপাশি গত বিধানসভা নির্বাচনের জন্য সরকারি প্রকল্পের কাজ থমকে ছিল। তারই মধ্যে মাত্র চার মাসেই রাজ্যজুড়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রার ৯০শতাংশ পূরণ হয়েছে। ইতিমধ্যেই বহু ছাত্রী প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে খুশি। তবে প্রয়োজনে নতুন করে আবারও প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা বাড়তে পারে বলেও মত প্রশাসনের কর্তাদের। চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যজুড়ে প্রায় ৩০ লক্ষ ছাত্রীকে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেইমতো জেলাভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের সুবিধা দ্রুত যাতে আবেদনকারীদের দেওয়া সম্ভব হয়, সেজন্য প্রতিটি জেলার মহকুমা ও ব্লক অফিসে জুন মাস থেকে পুরোদমে আবেদন জমা নেওয়া ও যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। ফলে মাত্র চার মাসে প্রায় ২৬ লক্ষ আবেদন মঞ্জুর করা সম্ভব হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ‘নির্বাচনী বিধি’ লাগু হতেই প্রকল্পের উপর স্থগিতাদেশ জারি হয়েছিল। কিন্তু তা উঠে যেতেই রাজ্যের তরফে বিভিন্ন জেলার প্রকল্প আধিকারিকদের ই-মেল করে প্রকল্পের কাজ চালুর নির্দেশ দেন। সেই মতো প্রকল্পের নবীকরণ, আপগ্রেডেশন, ভেরিফিকেশন প্রভৃতি কাজ শুরু হয়।
এবার রাজ্যে ২৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪৫৪ জন ছাত্রীকে প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল সরকার। এর মধ্যে কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পে সুবিধা পাবে ২৪ লক্ষ চার হাজার ৪০৮ জন। এছাড়া পাঁচ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৬ জন ছাত্রীকে কন্যাশ্রী-২এর সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়। ইতিমধ্যেই কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পে ২১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৬১ জন ও কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে ৪৭ হাজার ৩৯০ জনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়া গত আর্থিক বছরে রাজ্যের ৩০লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৭১ জন কন্যাশ্রী পেয়েছিলেন।
প্রকল্পের নদীয়া জেলা আধিকারিক সৌরভ গুপ্ত বলেন, আবেদনকারী ছাত্রীরা যাতে দ্রুত সুবিধা পেতে পারে সেজন্য আমরা জমা পড়া ওই আবেদন দু-একদিনের মধ্যে খতিয়ে দেখে রাজ্যস্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। স্কুল বন্ধ থাকায় সমস্যা হলেও অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে। তবে জেলার শান্তিপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। তাই ‘নির্বাচনী বিধি’ অনুযায়ী জেলাজুড়েই এখন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলায় এবছর এক লক্ষ ৬৯ হাজার ৫০৫ জনকে প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। সেই কাজও প্রায় শেষের পথে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে রাজ্য সরকার ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প চালু করে। উদ্দেশ্য ছিল, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েদের সরকারি সাহায্য প্রদান। প্রকল্পটিকে মূলত দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেসব ছাত্রীর বয়স ১৩ বছরের বেশি কিন্তু ১৮ বছরের কম তাদের কন্যাশ্রী-১ এর মাধ্যমে বার্ষিক বৃত্তি হিসেবে এক হাজার টাকা দেওয়া হয়। অন্যদিকে, কন্যাশ্রী-২ এর মাধ্যমে ১৮ বছর পেরলেই এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেয় রাজ্য।