গত ছ’বছরে ২৮ লক্ষ রাজ্যবাসীর মাথার উপর ছাদ দিয়েছে বাংলার সরকার
বাংলা আবাস যোজনা। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই গত ছ’বছরে ২৮ লক্ষ রাজ্যবাসীর মাথার উপর ছাদ দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই খাতে জেলাগুলিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল রাজ্য। আর ইতিমধ্যেই তার সিংহভাগ পূরণ হয়ে গিয়েছে।
২০১৬-১৭ সালে শুরু হয় এই প্রকল্প। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ৩৪ লক্ষের বেশি বাড়ি তৈরির টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৭৫ শতাংশের বেশি গৃহনির্মাণের কাজ শেষ করে ফেলেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে তার পরীক্ষাও হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষের বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ করে রাজ্যের শীর্ষে কোচবিহার। এছাড়াও পাঁচটি জেলা ৮০ শতাংশের বেশি কাজ সেরে ফেলেছে। ৭৫ শতাংশের বেশি গৃহনির্মাণ করেছে ছ’টি জেলা।
আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে ঠিক হয়, এই প্রকল্পের সুবিধা কারা পাবেন। আর এই সমীক্ষা হয় ব্লকে ব্লকে। মগরাহাট এলাকার তেমনই এক বৃদ্ধা বলেন, ‘বহুদিন ধরেই বেড়ার ঘরে বাস। ভাবিনি পাকা বাড়ি হবে। তারপর একদিন ব্লক অফিস আমার নাম নিয়ে গেল। বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পেলাম।’ তিন কিস্তিতে টাকা পেয়ে এক চিলতে ঘর তৈরি করেছেন এই বৃদ্ধা। এখন আর ঝড়-জলের সময় চিন্তা নেই। একই সুর কাকদ্বীপের এক বাসিন্দার গলাতেও। বললেন, ‘উপকূলবর্তী এলাকায় প্রতি বছর দুর্যোগ লেগে থাকে। পাকা বাড়ি না থাকায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ব্লক প্রশাসন আমার নাম এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করল। অবশেষে বাড়িটা হয়েছে। এটাই স্বস্তি।’
এই প্রকল্পে নতুন করে কোনও লক্ষ্যমাত্রা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। বরং পিছিয়ে থাকা জেলাগুলিকে দ্রুত টার্গেট পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। তবে একের পর এক দুর্যোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাড়ি নির্মাণে সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। অনেকেই একটা কিস্তির টাকা পেয়ে কাজে হাত দিয়েছিলেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে তারও ক্ষতি হয়েছে। ফলে সমস্যা হয়েছে পরের কিস্তির টাকা পেতে। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ার হার একটু কম। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে এই জেলা রাজ্যের মধ্যে চতুর্থ। জেলা আধিকারিকরা বলেন, কিছু ব্লক খুব ভালো কাজ করেছে। তাই সাফল্যের হার অনেকটা বেশি। নানা বাধা বিপত্তি কাটিয়ে এই জায়গায় পৌঁছনোটাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।