বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রতিরোধে পিছিয়ে ভারত, ছয় দফা দাওয়াই আন্তর্জাতিক সংস্থার
অসময়ে সাইক্লোন, অতিবৃষ্টির ঘটনার পিছনে রয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তনের সুদূরপ্রসারী ক্ষতিকর দিক তো রয়েছেই। তবে, এবছরের মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাৎক্ষণিক ক্ষতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এদেশে উষ্ণায়ন কমাতে যেসব পদক্ষেপ প্রয়োজন, তাতে খামতি রয়েছে বলেই মত আন্তর্জাতিক সংগঠন এনার্জি ট্রানজিশনস কমিশনের (ইটিসি)।
তাই এদেশে উষ্ণতা বৃদ্ধির হার দেড় ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে বেঁধে রাখার জন্য ছ’দফা দাওয়াই দিয়েছে তারা।
নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে ‘কপ২৬’ নামে জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। তার আগে উষ্ণায়ন বৃদ্ধি রোখার ক্ষেত্রে ভারত কিছুটা উদাসীন বলেই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী যেখানে দেড় ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে উষ্ণায়ন ঠেকিয়ে রাখার কথা ছিল, তা করা যায়নি। তার জন্য তারা মিথেন নিঃসরণ কমাতে বলেছে। এর জন্য তাঁরা কম ব্যয়ের বিভিন্ন প্রযুক্তি বাতলে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ মিথেন নির্গমনের হার কমিয়ে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের দাবি, শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে সঠিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই ৩০ শতাংশ কম মিথেন নিঃসৃত হতে পারে।
এর পাশাপাশি বন ধ্বংস ঠেকানোর সঙ্গে বনসৃজনে জোর দিতে হবে। তাদের দাবি, বন বাঁচিয়ে রেখে এবং নতুন বন সৃষ্টি করেই ৬.৫ গিগাটন গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমিয়ে ফেলা সম্ভব। এর জন্য ধনী দেশগুলির আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি। শক্তি উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে এবং কয়লা চালিত তাপবিদ্যুৎ সংস্থাগুলির পরিবর্তে ধাপে ধাপে পুনর্নবীকরণযোগ্য ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালু করেও ৩.৫ গিগাটন গ্রিন হাউস গ্যাস কমানো যাবে। এছাড়াও, পরিবহণ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়িয়ে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর একাধিক প্রস্তাব রয়েছে। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ২.৩ গিগাটন গ্রিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন কমবে। এর জন্য বিশেষ ধরনের ছোটগাড়িকে নিষিদ্ধ করার দাবিও তারা তুলেছে। নির্মাণ শিল্প, ভারী শিল্প, ভারী পরিবহণেও কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর পন্থা তারা বাতলেছে। সর্বোপরি, গ্রিন এনার্জির উপর আস্থা রাখা এবং তার ব্যবহার বাড়ানোর জোরালো সুপারিশও করা হয়েছে।