বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষায় সাফল্য পুরসভার, এক মাসেই ২ লক্ষের বেশি করোনার ভ্যাকসিন কুপন ইস্যু
মাত্র একমাসের কিছু বেশি সময়। তার মধ্যেই শহরে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ বাড়িতে সমীক্ষা চালাল কলকাতা পুরসভা। ভ্যাকসিন না নেওয়া মানুষকে বুঝিয়ে টিকার আওতায় নিয়ে আসা— এটাই ছিল মূল লক্ষ্য। তথ্য বলছে, এই কাজে অনেকটাই সাফল্য মিলেছে। বাড়ি বাড়ি কুপন পৌঁছে দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। দু’লক্ষেরও বেশি কুপন বিলি করা হয়েছে। যার মধ্যে পুজোর আগে প্রায় ৬৬ শতাংশ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ কিংবা দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। যার মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা প্রাপকের সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ, বলছে পুরসভা।
পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, কলকাতায় সর্বশেষ জনগণনা অনুসারে, আঠারো ঊর্ধ্ব মানুষ রয়েছেন প্রায় ৪৪ লক্ষ। সেখানে প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, শহরে সেই সংখ্যার বেশি মানুষ প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও কলকাতার মূল বাসিন্দাদের একাংশ টিকার আওতার বাইরে ছিল। যা প্রায় ১৪ শতাংশের কাছাকাছি। এরপরই পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, যাঁরা এখনও ভ্যাকসিন নেননি কিংবা দ্বিতীয় টিকা বাকি, সেই তালিকা তৈরি করা হবে। বাড়ি গিয়েই দিয়ে আসা হবে কুপন। আশাকর্মীরা সেই কাজ করছেন। সেই সমীক্ষায় হাতেগরম সাফল্য এসেছে, দাবি পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের। জানা গিয়েছে, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ বাড়ি ঘুরেছেন আশাকর্মীরা। ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৯২ জনকে কুপন ইস্যু করা হয়েছে। সমীক্ষার কাজ এখনও চলছে। ফলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। বিলি হওয়া কুপনের নিরিখে মাত্র ৩০ শতাংশ নাগরিক দ্বিতীয় ডোজের প্রাপক, বাকি ৭০ শতাংশ প্রথম ডোজের। যার মধ্যে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৬০ জন টিকা নিয়েছেন। তবে, আশ্চর্যের বিষয় হল, কুপন নেওয়ার পরেও অন্তত দু’-তিন শতাংশ নাগরিক টিকা নিতে যাননি। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, মূলত বস্তি অঞ্চলেই বেশি কুপন বিলি করা হয়েছে। এখনও অনেকে টিকা নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছেন। সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, কলকাতায় ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত টিকা প্রাপকের সংখ্যা ছিল ৭৪ লক্ষ ৪২ হাজার ৭৬৭ জন। যার মধ্যে ৪৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৪৫৭ জনের প্রথম ডোজ সম্পূর্ণ। ২৭ লক্ষ ১৪ হাজার ৩১০ জনের দ্বিতীয় ডোজও হয়ে গিয়েছে। তথ্য বলছে, গত ৭ অক্টোবর কলকাতায় টিকা নিয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৭৭ জন, ৮ অক্টোবর ৩৭ হাজার ৫৪১ জন, ৯ অক্টোবর ৩৩ হাজার ৫৭৬ জন এবং ১১ অক্টোবর টিকাপ্রাপকের সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৬৩৮ জন। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শহরে ১০০ শতাংশ নাগরিকের দু’টি ডোজই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা।