বাংলার উপনির্বাচনের দ্বিতীয় দফাতে তৃণমূল চারে চার, আত্মবিশ্বাসী মহুয়া মৈত্র
উপনির্বাচনের দ্বিতীয় দফাতেও জোড়াফুলের চারটি আসনে জয় নিয়ে ২০০ শতাংশ আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল সাংসদ Mahua Moitra। তবুও প্রচারে কোনওরকম ফাঁক দিতে চান না কৃষ্ণনগরের সাংসদ। পুজো মিটতেই শান্তিপুরের তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামীকে সঙ্গে নিয়ে পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়েছেন মহুয়া। তারই মাঝে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, ‘শান্তিপুরে জয় নিয়ে আমি ২০০ শতাংশ নিশ্চিত।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের শামিল হতে মানুষ বাড়ি থেকে রাস্তায় বেরিয়ে দুই হাত তুলে আশীর্বাদ করছে। তাই জেতার ব্যাপারে আমি পুরোটাই আশাবাদী।’
BJPর জেতা আসনে ফের লড়াই তৃণমূলের জন্য কতটা কঠিন? প্রশ্ন উঠতেই মহুয়ার সপাট জবাব। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবারেই ২১৩ আসনে জয় পেয়েছেন। এখন আর কেউ BJP-র ২০০ আসন জয়ের থিয়োরিতে ভুলবে না। ধর্মীয় মেরুকরণের ভিত্তিতে যে কটা আসন ভাগ্যের জোরে জিতেছিল BJP, সেখানকার মানুষও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। মানুষকে বারবার নিজের সুবিধার্থে ব্যবহার করতে ওরা পারবেন না। তবে প্রত্যেক নির্বাচন অবশ্যই কঠিন লড়াই। তবুও চারটি আসনেই আমরা জিতব।’
উল্লেখ্য একুশের নির্বাচনে শান্তিপুর বিধানসভা থেকে জয়ী হয়েছিলেন BJP প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। রাণাঘাটের সাংসদ পদ না ছেড়েই বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। পরে দলের নির্দেশে সাংসদ পদ না ছেড়ে বিধায়ক পদ ছাড়ার ফলে ফের শান্তিপুরে উপনির্বাচনের ঘোষণা।
কথায় কথায় আসে BJP নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রসঙ্গ। সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনার পর আরও তিন গুণ ভোটে জিতব!’ BJP নেতার নাম শুনেই মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘আমি ওর কথায় কোনও মন্তব্যই করব না।’
শান্তিপুরের ‘ভূমিপুত্র’ তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামীও জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। তিনি বলেন, ‘আগেরবারেও ওরা বলেছিল, আব কি বার, ২০০ পার। কী হয়েছে সবাই দেখেছে। আমি এখানকার ভূমিপুত্র। হাতের তালুর মতো এই এলাকা, এখানকার লোকজনকে চিনি। আমি মাঠ-ঘাটের লোক। তাই আমি নিশ্চিত, আমি জিতছি।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবারে শান্তিপুরে মূলত ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে। একদিকে, হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস তাদের উন্নয়নকে তুলে ধরে ভোট আদায় করতে চাইছে, জগন্নাথ সরকারের বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার ইস্যু তুলে ধরে শান্তিপুরের ভূমিপুত্রকেই প্রার্থী করে বাজিমাত করতে চাইছে ঘাস-ফুল শিবির। অন্যদিকে, শাসকদলের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগের প্রমাণ তুলে ধরে মাঠে নেমে পড়েছে BJP। জেতা জমি ধরে রাখতে চেষ্টার ত্রুটি রাখতে নারাজ তারা। আর শাসক ও বিরোধী দলের ভুল-ত্রুটি তুলে ধরে মাঠে নেমেছে বামেরাও। সবমিলিয়ে, এবারে শান্তিপুর বিধানসভায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।