আর্থার রোড জেলে গিয়ে বন্দি পুত্র আরিয়ানের সঙ্গে দেখা করলেন শাহরুখ খান
আর্থার রোড জেলে গিয়ে মাদক-মামলায় বন্দি পুত্র আরিয়ানের সঙ্গে দেখা করলেন ‘বলিউডের বাদশা’ শাহরুখ খান। মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর হাতে আরিয়ান গ্রেফতার হওয়ার পর এই প্রথম তাঁর সঙ্গে জেলে গিয়ে দেখা করলেন শাহরুখ। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে পৌঁছন শাহরুখ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবীদের একটি দল। জেলের ভিতর প্রায় ১৫ মিনিট ছিলেন শাহরুখ। দ্রুত সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে যান তিনি। তাঁর সঙ্গেই ফেরত যায় আইনজীবীদের দলটিও।
ছেলের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি আড়ালেই রাখতে চেয়েছিলেন শাহরুখ। যে কারণে বড় কনভয় বা বড় গাড়ি নিয়ে তিনি আর্থার রোড জেলে যাননি। তিনি পৌঁছন একটি ছোট গাড়িতে। গাড়ির কাচ কালো। তখনও দেশের বাণিজ্যনগরীতে অফিস টাইম ঠিকঠাক শুরু হয়নি।
তবে শাহরুখের আসার খবর আগে থেকেই পেয়ে গিয়েছিল সংবাদমাধ্যমের একাংশ। ফলে তারা আর্থার রোড জেলের মূল ফটকের বাইরে ভিড় করেছিল। জমায়েত ছিল জেলের প্রহরীদেরও। আর্থার রোড জেলটি মুম্বই শহরের মধ্যেই। একটা সময়ে সেখানে বিশেষ টাডা আদালতে বিচার হয়েছিল বলিউডের নায়ক সঞ্জয় দত্তের। সেখানে বেশ কিছুদিন বন্দিও ছিলেন তিনি। বন্দি ছিল ২৬/১১ মামলায় অভিযুক্ত পাক জঙ্গি আজমল আমির কসাবও। শহরের মধ্যে একটি ব্যস্ত রাস্তার উপর ওই জেলের ফটকে অল্প লোক জমায়েত হলেই তা ভিড়ের চেহারা নেয়। বৃহস্পতিবার সকালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
জেলের মূল ফটকের সামনেই গাড়ির পিছনের আসন থেকে নামেন শাহরুখ। পরণে খুব সাধারণ একটি গোল-গলা টি-শার্ট এবং জিনসের ট্রাউজার্স। মুখ ঢাকা কালো মাস্কে। চোখে কালো রোদচশমা। মাথার লম্বা চুল পনিটেলে বাঁধা। দেহরক্ষী পরিবৃত হয়ে তিনি দ্রুত জেলের ভিতরে চলে যান।
প্রশাসনের অনুমতির ভিত্তিতে সাধারণত এই ধরনের সাক্ষাৎ ৫ থেকে ১০ মিনিটের হয়ে থাকে। শাহরুখ জেলের ভিতরে ছিলেন প্রায় ১৫ মিনিট। তবে ওই সময়ের পুরোটাই তিনি আরিয়ানের সঙ্গে ছিলেন, এমন কথা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, বিভিন্ন ঔপচারিকতা মেটাতেও খানিকটা সময় লাগে। সূত্রের খবর, বুধবারেই জেল কর্তৃপক্ষের থেকে পুত্রের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছিলেন শাহরুখ। সেই মতো বেলা গড়ানোর আগেই তিনি পৌঁছন জেলে।
আরিয়ানের সঙ্গে দেখা করে জেল থেকে বেরোনর পর শাহরুখ সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি। যেমন মুখ খোলেননি ভিতরে যাওয়ার সময়েও। লম্বা-চওড়া চেহারার দেহরক্ষী তাঁকে ঘিরে দ্রুত গাড়িতে তুলে দেন। অনতিবিলম্বে জেলচত্বর ছেড়ে যান শাহরুখ। তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে যায় তাঁর আইনজীবীর দলও।
প্রসঙ্গত, গত ২ অক্টোবর একটি প্রমোদতরী থেকে আরিয়ান-সহ আটজনকে মাদক মামলায় আটক করা হয়। ৩ তারিখে তাঁদের সরকারি ভাবে গ্রেফতার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো। তার পরে ওই মামলায় আরও অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩ তারিখ থেকেই আরিয়ানরা মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর হেফাজতে। গত ৮ অক্টোবর আদালতে হাজির করানো হলে আরিয়ানকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে একাধিক বার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে তিনি এখনও জেলেই বন্দি।
পুত্রের গ্রেফতারির পর এই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন বাবা শাহরুখ। এর আগে তিনি ওই বিষয়ে কোথাওই কোনও মন্তব্য করেননি। প্রকাশ্যে দেখা দেওয়া তো দূরস্থান! তবে বলিউড নক্ষত্রদের একাংশ শাহরুখের পাশে দাঁড়িয়েছে। শাহরুখের বাড়িতে গিয়েছিলেন সলমন খান। বলিউডের একাংশের অভিযোগ, এর পিছনে বিজেপি-র রাজনীতিও রয়েছে।