রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কী পদ্ধতিতে মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন হবে? পুরভবনে আজ বৈঠক

October 25, 2021 | 2 min read

করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছিল মূলত দক্ষিণ, সংযুক্ত ও পূর্ব কলকাতায়। পুজোয় বিধি না মানার ফলে ফের বাড়তে শুরু করেছে দৈনিক সংক্রামিতের সংখ্যা। চিন্তা বাড়িয়েছে সেই একই এলাকা। রুবি, কসবা, মুকুন্দপুর, গড়িয়া, পাটুলি, সন্তোষপুর, গল্ফগ্রিন, বিজয়গড়, আজাদগড়, ব্রহ্মপুর, কুঁদঘাট, বেহালা, ঠাকুরপুকুর, জোকা এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পুর প্রশাসনের। কলকাতা পুরসভার তথ্য বলছে, দৈনিক আক্রান্তের মধ্যে ৬০ শতাংশই রয়েছে শহরের চারটি জোনে। ফলে, শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে কী পদ্ধতিতে মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন করা হবে, আদৌ করা হবে কি না, তা নিয়ে হিসেব কষছে পুরসভা। আজ, সোমবার পুরভবনে এ নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা।


সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে উদ্বেগ বাড়িয়েছে কলকাতার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। গত দু’সপ্তাহে দৈনিক আক্রান্ত এখানে ১৪০ ছুঁয়েছে। এছাড়াও ৯৪, ৯৬, ৯৭, ৯৮, ১০০, ১০১, ১০৪, ১০৭, ১১০, ১১১, ১১২, ১১৩, ১১৪, ১২৩, ১২৪, ১২৫, ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডগুলি থেকেও সংক্রমণের খবর আসছে। বরোভিত্তিক হিসেব বলছে, শহরের ১৬টি বরোর মধ্যে চারটি বরো অর্থাৎ ১০, ১১, ১২ এবং ১৬-তেই সবথেকে বেশি নাগরিক আক্রান্ত হচ্ছেন। যেমন, শনিবার ১০ নম্বর বরো অর্থাৎ গল্ফগ্রিন, বিজয়গড়, আজাদগড়, শ্রী কলোনি ১ ও ২, বিদ্যাসাগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখানে আগেও আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে বরোর কো-অর্ডিনেটর তপন দাশগুপ্ত বলেন, সব থেকে বেশি সংখ্যক ওয়ার্ড এই বরোতেই রয়েছে। তাই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়াই স্বাভাবিক।


আবার ১২ নম্বর বরোর অন্তর্গত ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। প্রতিদিন সেখানে বহু রোগী ভর্তি হন। রোগীদের পরিবারের লোকজন অবাধে হাসপাতালে ঢুকছেন, বেরচ্ছেন। বরোর কো-অর্ডিনেটর সুশান্ত ঘোষ বলেন, অনেক হাসপাতাল থাকায় এই বরো এলাকায় প্রথম থেকেই কেস বেশি হচ্ছে। তবে, আগের মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।


১৬ নম্বর বরোর বেহালা, ঠাকুরপুকুর, জোকার বিস্তীর্ণ এলাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা ও বিষ্ণুপুর লাগোয়া। সেখান থেকেও নিত্যদিন বহু মানুষ কলকাতায় আসা-যাওয়া করছেন। একইভাবে ১১ নম্বর বরো অঞ্চলটি সোনারপুর-রাজপুর পুরসভা লাগোয়া। সেখানকার বরোর কো-অর্ডিনেটর তারকেশ্বর চক্রবর্তীর কথায়, লাগোয়া জেলা থেকে নিয়মিত প্রচুর শ্রমিক- কর্মচারী কলকাতায় যাতায়াত করেন। তাঁরাই ক্যারিয়ার। এই বরোতেই রয়েছে সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার সীমান্তবর্তী রানিয়া বর্ডার। সেখান থেকে অবাধে লোকজন আসছে শহর কলকাতায়। ফলে, আক্রান্তের সংখ্যা খানিকটা হলেও বেড়েছে। তবে যাই হোক, কলকাতা পুরসভার ভারপ্রাপ্ত বরো কো-অর্ডিনেটররা কেউই সংক্রমণ বৃদ্ধির দায় নিতে চাননি। বরং তাঁরা সেই দায় চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন পাশের জেলাকেই, তা তাঁদের কথাতেই স্পষ্ট।


ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার কন্টেইনমেন্ট জোন তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৈঠক হওয়ার কথা। মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বৈঠকে থাকবেন বলে খবর। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, কলকাতায় মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন করতে গেলে নানা সমস্যা রয়েছে। একটি আবাসনে একাধিক কেস পাওয়া গেলে তাকে কন্টেইনমেন্ট করা যেতেই পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আবাসনের অন্য পরিবারের অসুবিধা হবে। এর আগেও সেই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। ফলে কীভাবে কন্টেইনমেন্ট করা যায়, কিংবা আদৌ করা সম্ভব কি না, তা বিবেচনা করে দেখতে হবে। তবে আমরা আক্রান্ত পরিবারের অন্য সদস্যদেরও খোঁজ নিচ্ছি। বাড়ি থেকে না বেরনোর অনুরোধ করছি। সতর্ক থাকার উপরেই বেশি জোর দিতে চাইছি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Corona, #covid 19, #micro containment zone, #Puro Bhaban

আরো দেখুন