আরিয়ান কাণ্ডে ঘুষ! এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে তদন্ত
আরিয়ানকে ছাড়াতে সুপারস্টার শাহরুখ খানের কাছে ঘুষ চেয়েছিলেন প্রাইভেট ডিটেকটিভ কে পি গোসাভি। রফা হয় ১৮ কোটি টাকায়। তার মধ্যে ৮ কোটিই যেত এনসিবির জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের পকেটে! চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী তথা গোসাভির ব্যক্তিগত দেহরক্ষী প্রভাকর রাঘোজি সইলের। তার জেরেই নয়া মোড় আরিয়ান কাণ্ডে। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতে চাপে পড়ে তড়িঘড়ি এনসিবির সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। আজ, মঙ্গলবারই দিল্লি থেকে মুম্বই আসছে তিন সদস্যের তদন্তকারী দল। নেতৃত্বে থাকবেন এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল জ্ঞানেশ্বর সিং। পরিস্থিতি এমনই যে সোমবার বিশেষ এনডিপিএস আদালতে গ্রেপ্তারির আশঙ্কা পর্যন্ত প্রকাশ করেছেন সমীর। সন্ধ্যায় তিনি রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছেছেন। তবে কাজের সুবাদেই এই সফর বলে দাবি তাঁর। অন্যদিকে, গোয়েন্দা গোসাভি এখনও পর্যন্ত ‘পলাতক’। যদিও এদিন এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘শীঘ্রই লখনউ পুলিসের কাছে আত্মসমর্পণ করব।’
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মহারাষ্ট্রের প্রধান শরিক শিবসেনা। এদিন সকাল থেকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা এনসিপি দলের মুখপাত্র নবাব মালিক। একটি জন্ম শংসাপত্রের ছবি পোস্ট করে তিনি দেখিয়েছেন, এনসিবি কর্তা কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে বাবার নাম লুকিয়েছেন। যাকে ‘জালিয়াতি’ বলেও কটাক্ষ করেছেন নবাব। এরপরেই নাম না করে একজন রাজনৈতিক নেতা তাঁকে টার্গেট করছেন বলে বিশেষ এনডিপিএস আদালতে হলফনামা জমা দেন সমীর। তাঁর আর্জি, মাদক মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষার স্বার্থে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ নিক আদালত।
মিথ্যে মামলায় তাঁকে জড়িয়ে গ্রেপ্তার করা হতে পারে, আগেই পুলিসের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এনসিবি কর্তা। এদিন হলফনামায় সমীর আরও লিখেছেন, ‘আমার ও পরিবারের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা হচ্ছে। মন্ত্রীর পদক্ষেপ, আমাকে অত্যন্ত মানসিক চাপে রেখেছে। আমার, পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যে, ভুয়ো অভিযোগ আনা হচ্ছে। প্রতিশোধ নেওয়ার ধারাবাহিক চেষ্টা চলছে। আমার মা মুসলমান ছিলেন। উনি এর মধ্যে আমার প্রয়াত মা’কে টেনে আনছেন কেন?’
এর মধ্যেই নড়েচড়ে বসে এনসিবি। সংবাদ সংস্থাকে জ্ঞানেশ্বর সিং বলেন, ‘আমরা ওই হলফনামাটা পেয়েছি এবং মুম্বইয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (উত্তর-পূর্ব) একটি রিপোর্টও পাঠিয়েছেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে এনসিবির ডিরেক্টর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ তদন্তকারী সংস্থাকে কলঙ্কমুক্ত রাখতেই এই পদক্ষেপ বলেই তাঁর দাবি। তিনি আরও জানান, ‘আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে যে কোনও অভিযোগ উঠলে তার তদন্তের জন্য আমরা প্রস্তুত। আর সেই তদন্ত হবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ।’ তবে আদালতে সমীরের পাশে দাঁড়িয়ে প্রভাকর সইলকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়েছে এনসিবি। জমা দেওয়া হলফনামায় তাদের দরাজ শংসাপত্র, ‘ওয়াংখেড়ের কর্মজীবনের রেকর্ডে কোনও কালি নেই। ওঁর সততা ও নৈতিকতা প্রশ্নাতীত।’