পাকিস্তানের কাছে ভারতের হারের পরই নেটিজেনদের রোষে শামি
গত ২৯ বছরের রেকর্ড রবিবার মরুশহরে এক ঝটকায় ভেঙে গেল। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত থাকার ইতিহাসে ইতি ঘটল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) হাত ধরে। কিন্তু ম্যাচ শেষে এই হারের জন্য কাঠগড়ায় তোলা হল শুধুমাত্র মহম্মদ শামিকে! কারণটা খুব স্পষ্ট। ধর্মের আধারে বিবেচনা করা হল শামির দেশাত্মবোধ, আত্মত্যাগকে। নেটিজেনদের একাংশের কটাক্ষের জবাবও দিয়েছেন শামি সমর্থকরা।
রোহিত শর্মার চূড়ান্ত ব্যর্থতা, ঋষভ পন্থের অপদার্থতা, বিরাট কোহলির জঘন্য অধিনায়কত্ব, টসে হার, ২২ গজে শিশিরের ফ্যাক্টর- এই সব কিছু উপেক্ষা করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হারের দায় চাপিয়ে দেওয়া হল শামির (Mohammed Shami) কাঁধে। যে ভারতীয় পেসারকে দেশের জার্সি গায়ে বহু ম্যাচে ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শামিকে তীব্র আক্রমণ করে লেখা, “পাকিস্তানের থেকে কত টাকা খেয়েছ? একটু তো লজ্জা হওয়া উচিত ছিল। আমাদের তো চোখের জলে ভাসতে হল।” এমনকী পাকিস্তানই যে শামির মুলুক, সে কথা বলতেও ছাড়েনি ওই নেটিজেন। ভারতের প্রথম একাদশের একমাত্র মুসলিম ক্রিকেটার হওয়ায় সমস্ত ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে শামির উপরই। তবে ভারতীয় পেসার এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও তাঁর হয়ে সুর চড়িয়েছেন তাঁর ভক্তরাই।
অনেকেই লিখেছেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে গিয়ে দেশের জন্য খেলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা (Team India)। বাবর আজমদের বিরুদ্ধে এই হারের দায় গোটা দলের। সাংবাদিক সম্মেলনে ক্যাপ্টেন কোহলিও হারের একাধিক কারণ তুলে ধরেছেন। সেখানে আলাদা করে শামির (Mohammed Shami) নাম করা হয়নি। প্রকৃত ক্রিকেটপ্রেমীদের তাই প্রশ্ন, তাহলে কোন যুক্তিতে শুধু শামিকেই কাঠগড়ায় তোলা হবে? শামির হয়ে গর্জে উঠেছেন প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র শেহওয়াগ, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও। নেটিজেনদের একাংশ আবার কোহলিকে শামির পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার অনুরোধও জানিয়েছেন।
তবে এই ঘটনার পাশাপাশি অন্য একটি বিষয়ে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রবিবার মেগা ম্যাচের শুরুতে দেখা যায়, বর্ণবিদ্বেষের প্রতিবাদস্বরূপ হাঁটু গেড়ে বসেছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। এই দৃশ্য তুলে ধরেই নেটদুনিয়ার প্রশ্ন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা-সহ দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন মুখ খোলেন না কোহলিরা? তাঁরা মন্তব্যে উদ্বুদ্ধ হন অনেকেই। তাই দেশের বিভিন্ন বিতর্ক ও ইস্যুতে তাঁদেরও শামিল হওয়া উচিত বলে মনে করছে সোশ্যাল মিডিয়া।