বাংলায় বাড়ছে টিকার দ্বিতীয় ডোজের সংখ্যা
দৈনিক দ্বিতীয় ডোজের সংখ্যা বাড়াচ্ছে রাজ্য। প্রথম ডোজ প্রাপ্য মানুষের সংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকায় রাজ্য এই সিদ্ধান্ত নিল। করোনা টিকাকরণ কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ প্রাপ্য এমন মানুষের সংখ্যা কমলে স্বাভাবিক নিয়মেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার সংখ্যা বাড়বে।
সূত্রের খবর, এতদিন দৈনিক ডোজের ২০-২৫ শতাংশ ডোজ ছিল দ্বিতীয় ডোজ। বাকি ৭৫-৮০ শতাংশ ডোজই ছিল প্রথম। গত ৪৮ ঘণ্টায় এই অনুপাত পাল্টেছে। হয়ে দাঁড়িয়েছে ৬০:৪০। যার অর্থ খুব স্পষ্ট। দৈনিক ডোজের সংখ্যা ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশ করা হচ্ছে।
এদিকে দ্বিতীয় ডোজ মনে করাতে গ্রামের বাড়ি বাড়ি পাঠানো হবে আশাকর্মীদের। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে-কথা তারা বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যকে জানিয়েছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতেও বলেছে। সেকারণে রাজ্য শীঘ্রই এই মর্মে নির্দেশনামাও জারি করতে চলেছে।
রাজ্যের টিকাকরণের এক শীর্ষকর্তা বলেন, শহরাঞ্চলে ব্যাপক প্রচারাভিযানের কারণে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ব্যাপারে সচেতনতা অনেক বেশি। তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকা। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার এসএমএস পাঠানো হলেও প্রযুক্তিগত ব্যাপারে বহু বয়স্ক মানুষই সড়গড় নন। অনেকে কাজেকর্মে ভুলেও যান। তা যে কারণই হোক না কেন, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। তার এ বিষয়ে কোনও ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না কেন্দ্র। আমরাও মনে করছি, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে আখেরে রাজ্যের লাভ, সেই মানুষটির লাভ তো বটেই।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্তত আট থেকে নয় লক্ষ মানুষ নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ এখনও নেননি। তার মধ্যে কোভিড যোদ্ধাদের পুরানো হিসেব নিকেশে গন্ডগোল থাকায় প্রায় চার-পাঁচ লক্ষ নাম নিয়ে সমস্যা আছেই। বাকি কয়েক লক্ষ মানুষ যাতে সময়ে দ্বিতীয় ডোজ থেকে বঞ্চিত না হন, সেই উদ্দেশ্যে ‘রিমাইন্ডার’ দিতে পাঠানো হবে আশাকর্মীদের।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্তমানে প্রথম ডোজ পাওয়া রাজ্যবাসীর সংখ্যা কমবেশি ৭২ শতাংশ। দুর্গোৎসব শেষ হতে না-হতেই করোনা টিকাদান আরও বাড়ানোর অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। ১-২৫ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যে ১ কোটি ৫২ লক্ষ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বড়সড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা পরিকাঠামোগত সমস্যা না-হলে এমাসে মোট ডোজের সংখ্যায় ফের রেকর্ড গড়তে পারে বাংলা। এদিন রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বাংলায়। সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় ডোজের সংখ্যা এদিন ২ কোটি ছাড়াল। প্রথম ডোজ প্রাপকদের ৪০ শতাংশই এখন দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন।